‘বিভাগীয় ব্যবস্থা ছাড়া শাস্তি নয়, গ্রেপ্তার অনুমোদন নিয়ে’

বিভাগীয় ব্যবস্থার আগে সরকারি চাকুরেদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার বিধান রেখে আইন হচ্ছে।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2014, 12:34 PM
Updated : 20 July 2014, 02:11 PM

প্রস্তাবিত আইনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তারের আগে সরকারের অনুমোদন নেয়ার বিধানও রাখা হচ্ছে।

রোববার সচিবালয়ে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় ‘সরকারি কর্মচারী আইন’ এর খসড়া নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে।

কমিটির পরবর্তী সভায় তা চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই আইনের খসড়া নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করা হবে। খসড়াটি চূড়ান্তের আগে পাশ্ববর্তী দেশগুলোর এ সংক্রান্ত আইন বিশ্লেষণ করব আমরা।”

প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদনের পর আইনটি চূড়ান্ত অনুমোদনে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভার সায় পেলেই তা সংসদে উপস্থাপিত হবে।

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য আইন প্রণয়নের বাধ্যবাধকতা থাকলেও দীর্ঘ দিনেও তা প্রণীত হয়নি। ফলে বিধি, নীতিমালা ও প্রয়োজনমতো নির্দেশনাপত্র জারি করে সরকারি কর্মচারীদের পরিচালনা করা হচ্ছে এতদিন ধরে।

সরকারি কর্মচারী আইনের খসড়ার একটি অনুলিপি হাতে পেয়েছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

এতে বলা হয়েছে, আত্মপক্ষ সমর্থন এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা না নিয়ে কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে না।

দায়িত্ব পালনের সময় সরকারের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যে কোনো অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশন বা অনুরূপ ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থা তদন্ত করে আদালতে অভিযোগ দায়ের করতে পারবে।

তবে ফৌজদারি মামলায় আদালতে অভিযোগ গ্রহণের আগে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারের অনুমোদন নিতে হবে বলে খসড়ায় বলা হয়েছে।

দুর্নীতিসহ অন্য অপরাধে কোনো কর্মচারীর তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হলে তাকে চাকরিতে বহাল রাখার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।

আইনের খসড়া অনুযায়ী, তিন বছরের বেশি মেয়াদে কারাদণ্ড হলে সরকারি কর্মচারীকে চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা যাবে।

জনপ্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়

সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতিসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হলে ভুক্তভোগী ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করতে পারবেন।

মেধা, জ্যেষ্ঠতা, প্রশিক্ষণ, পেশাগত দক্ষতা ও কর্ম মূল্যায়নকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হবে বলে খসড়ায় বলা হয়েছে।

খসড়া আইন অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি স্থায়ী বেতন কমিশন রাখতে হবে, যা প্রতি বছর বাজার মূল্যের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে বেতন বৃদ্ধি সমন্বয় করে বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে সুপারিশ করবে।

আইনটি বাস্তবায়ন হলে সরকারি কর্মচারীদের উৎসাহ দিতে জনসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কার ও স্বীকৃতির ব্যবস্থা করা হবে।

আইনের খসড়া অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবেন না এবং তাদের নিরপেক্ষভাবে নাগরিক সেবা নিশ্চিতে সচেষ্ট থাকতে হবে।

জনপ্রশাসন সচিব বলেন, আইনটি হলে তা বাস্তবায়নে সরকার বিধি প্রণয়ন করতে পারবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী তা সংশোধন এবং পরিবর্তনও করতে পারবে।