পরিচয় নিবন্ধনে জন্মসনদ বাধ্যতামূলক হচ্ছে

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনে জন্মসনদ জমা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। আর তা সত্যয়নের ক্ষমতা অন্যদের পাশাপাশি পেতে যাচ্ছেন সংসদ সদস্যরাও।

মঈনুল হক চৌধুরী জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2014, 03:47 AM
Updated : 20 July 2014, 04:09 AM

এরকম বেশ কিছু বিষয়ে সংশোধন অথবা সংযোজন আনতে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ে।

নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা বলছেন, প্রস্তাবিত নিবন্ধন ফরম ও বিদ্যমান ফরমের মধ্যে তথ্যগত তেমন পার্থক্য না থাকলেও আগামীতে ভোটার হালনাগাদ কাজের সময় সংশোধিত ফরম ব্যবহার হবে।

প্রস্তাবিত নিবন্ধন ফরমে আবেদনকারীদের নির্দেশাবলীতে বলা হয়েছে, আবেদনকারীকে আবেদনপত্রের সঙ্গে তার জন্ম নিবন্ধন সনদ/ পিএসসি/ জেএসসি/ এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত অনুলিপি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা সত্যয়ন করতে পারবেন।

নতুন ফরমে একাধিক স্ত্রী থাকলে আলাদা কাগজে প্রত্যেকের নামসহ জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করে সংযুক্ত করার বিষয়টিও রাখা হয়েছে। পাশাপাশি অটিজম, ডাউন সিনড্রোম, বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধকতাও যোগ করা হয়েছে নতুন করে ভোটারের প্রকৃতির ঘরে।

সব নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার বিধান রেখে গত বছর ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (সংশোধন) বিল-২০১৩’ সংসদে পাস হয়। আইনে সংশোধন আনা হলেও এখনো ১৮ বছরের কমবয়সীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেনি ইসি।

২০০৮ সাল থেকে শুধু ভোটারযোগ্যদের ছবিসহ ভোটার তালিকাভুক্তির পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নিবন্ধন কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, “ভোটার তালিকাভুক্তি, স্থানান্তর, সংশোধন, নাম কর্তনসহ অনেক ধরনের আবেদন ফরম ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে কখনো কখনো দলিলাদির সত্যয়নের পাশাপাশি ফরমেও প্রত্যয়নের প্রয়োজন পড়ে। গেজেটেড কর্মকর্তা বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তা সত্যয়ন করে দেয়ার বিধান রয়েছে। তবে এবার সংসদ সদস্যদের দিয়েও সত্যয়নের সুযোগ রাখা হচ্ছে।”

চলছে হালনাগাদের কাজ

এদিকে নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৪৪টি উপজেলার ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ হয়েছে, যাতে ভোটার বেড়েছে ১০ লাখ ৩২ হাজার৩৯৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫১ জন (২.৭২%) এবং মহিলা ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪৬ জন (২.০৬%)।

ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, এসব উপজেলায় ভোটার বৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিবন্ধন হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুরে, ৬.৮৮% এবং সর্বনিম্ন বাগেরহাট সদর উপজেলায়, ৩.৩২%।

ইতোমধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে ২১৩টি উপজেলায় নিবন্ধনের কাজ চলছে। এসব উপজেলায় ১৫-২৫ জুন ২০১৪ বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয়েছে।

তৃতীয় পর্যায়ে ঢাকা মহানগরীসহ ১২০ টি উপজেলার তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে ১ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর এবং নিবন্ধন চলবে ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত।

২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সের নাগরিকদের ভোটার করার লক্ষ্য নিয়ে ১৫ মে থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এ যাত্রায় ৪৬ লাখ ভোটার বৃদ্ধির ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করা হয়। মোট তিন ধাপে ৫১৪টি উপজেলা/থানায় হালনাগাদ কার্যক্রম চলবে।

বর্তমানে ৯ কোটি ১৯ লাখের বেশি ভোটার রয়েছে দেশে।