ইমরান সিদ্দিকী যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রাজ্জাক এখন বিদেশে রয়েছেন।
সুচিত্রা সেনের বাড়ির মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ে ইমরানের সম্পর্কে মন্তব্য করে আপিল বিভাগ, যার একটি অনুলিপি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে এসেছে।
বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ গত ৪ মে এই রায় দেয়।
এই রায়ে ‘মহানায়িকা’ সুচিত্রার পাবনার পৈত্রিক ভূমিতে অবিলম্বে তার নামে সংগ্রহশালা করার নির্দেশ রয়েছে।
রায়ের শেষাংশে বলা হয়, “উদ্বেগের সঙ্গে আমাদেরকে আরেকটি বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে। গাজ্জালী ইনস্টিটিউটের পক্ষের আইনজীবী ইমরান সিদ্দিকী ২০১১ সালের অগাস্টে স্কুল সরাতে দুই মাস সময় চেয়ে হাই কোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ চান। তাদের সেই আবেদন মঞ্জুর হয়।
“সেই স্থগিতাদেশ সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়নের পর স্কুল সরানোর পরিবর্তে আবেদনকারী আপিলের আবেদন করেন এবং আরো তিন বছর ওই সম্পত্তি নিজেদের দখলে রাখেন।”
“আমাদের মত হচ্ছে, এই কাজের মাধ্যমে আইনজীবী ও তার মক্কেল আদালতের সঙ্গে সুস্পষ্ট প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। যার জন্য তাদের কঠোর তিরস্কার প্রাপ্য,” বলেছে আদালত।
সুচিত্রার এই বাড়ি নিয়ে দুটি রিট আবেদন হয়। দখল বজায় রাখতে ইমাম গাজ্জালী ইনস্টিটিউটের আইয়ুব হোসেন খান ২০০৯ সালে একটি আবেদন করেন।
অন্যদিকে ২০১১ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আরেকটি আবেদন হয় সুচিত্রার জন্মস্থান সংরক্ষণে।
উভয় রিট আবেদনের পর হাই কোর্ট পৃথক রুল দেয়। উভয় রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২১ অগাস্ট হাই কোর্ট রিট দুটি নিষ্পত্তি করে দেয়। এরপর আপিল বিভাগে যায় গাজ্জালী ইনস্টিটিউট।
বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা সুচিত্রা সেনের শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতি বিজড়িত এই বাড়িটির অবস্থান পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনে।
১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল জন্ম নেয়া সুচিত্রার শৈশব-কৈশোর কাটে এই বাড়িতে। গত ১৭ জানুয়ারি চির অন্তরালে চলে যান এই নায়িকা।
১৯৮৭ সালে পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক সাইদুর রহমান বাড়িটি বাৎসরিক চুক্তি ভিত্তিতে ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্টকে ইজারা দেন। এ ট্রাস্টের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন জামায়াত নেতা ও যুদ্ধপরাধের মামলায় বিচারাধীন আব্দুস সুবহান।