এই পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের যত রায়

চার বছর আগে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মামলার রায় দিয়ে একাদশ মামলাটি নিষ্পত্তি করতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

কাজী শাহরিন হকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2014, 04:38 PM
Updated : 23 June 2014, 05:07 PM

এর মধ্যে দুই ট্রাইব্যুনালে নয়টি মামলার রায় হয়েছে। খুলনার এ কে এম ইউসুফ মারা যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলাটি আর না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তা নিষ্পত্তি করা হয়।

নিজামীর মামলার রায়ের আগের দিন সোমবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বলেন, ট্রাইব্যুনাল এ যাবৎ নয়টি মামলার রায় দিয়েছে এবং একজন আসামির মৃত্যুর কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত সমাপ্তি ঘোষণা করেছে।

বর্তমানে দুই ট্রাইব্যুনালে ১০টি মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে নিজামীরটিসহ চারটি মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের কাজের গতি বাড়াতে ২০১২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করা হয়।

২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি প্রথম রায়টি আসে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল থেকেই। ওই রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদকে (বাচ্চু রাজাকার) মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। বিচার প্রক্রিয়ার শুরু থেকে এখনো পলাতক তিনি।

এরপর ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।

তবে পরে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ আপিলের রায়ে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর ফাঁসির রায় কার্যকরও হয়।

ট্রাইব্যুনালের তৃতীয় রায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড হয়। এরপর একই বছরের ৯ মে চতুর্থ রায়ে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

এরপর ১৫ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উস্কানির দায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমির গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। এটি ছিল ট্রাইব্যুনালের পঞ্চম রায়।

ষষ্ঠ রায়ে গতবছরের ১৭ জুলাই জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

১ অক্টোবর সপ্তম রায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রামের তৎকালীন সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় আসে। এরপর ৯ অক্টোবর বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। 

সর্বশেষ গত বছরের ৩ নভেম্বর একাত্তরে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার নীলনকশা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দেয়া দুই বদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল।এই দুজনের অনুপস্থিতিতেই বিচার চলে।

এর মধ্যে ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ঘোষিত হয় তিনটি রায়। এগুলো হল- গোলাম আযম, সাঈদী ও সালাউদ্দিন কাদেরের রায়। বাকি ছয়টি মামলায় রায় হয় ট্রাইব্যুনাল-২ এ।

কাদের মোল্লা ছাড়া আরো কারো আপিলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনো হয়নি।

আইনমন্ত্রী সংসদে জানান, যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে এ যাবত সারাদেশে ৫৭৭টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকা বিভাগে ১১২টি, চট্টগ্রামে ৮৪টি, রাজশাহীতে ৬৬টি, খুলনায় ১৮৪টি, সিলেটে ৫০টি, বরিশালে ৫১টি, রংপুরে ৩০টি।