৭ খুনের জবানবন্দি নিয়ে খবর ‘বিভ্রান্তিকর’: র‌্যাব

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলায় গ্রেপ্তার র‌্যাবের দুই কর্মকর্তার জবানবন্দি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘বিভ্রান্তি’ ছড়ানো হচ্ছে বলে এই বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2014, 01:12 PM
Updated : 7 June 2014, 01:12 PM

আদালতের হাকিমের রুদ্ধদ্বার কক্ষে দেয়া এই জবানবন্দির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের বক্তব্য ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও র‌্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে খুনের মামলায় র‌্যাবের সাবেক দুই কর্মকর্তা আরিফ হোসেন ও এম এম রানা গত সপ্তাহে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

হাকিমের কাছে দেয়া তাদের জবানবন্দির বিভিন্ন দিক সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে আসছেন আইনজীবী নেতা সাখাওয়াত। এই খুনের বিচার দাবির আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা এই আইনজীবী বৃহস্পতিবার হুমকি পাওয়ার কথাও পুলিশকে জানিয়েছেন।     

শনিবার র‌্যাবের মুখপাত্র এ টি এম হাবিবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, জবানবন্দির ভিত্তিতে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে গত ৬ জুন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ‘কাল্পনিক’ নাম প্রকাশ করা হয়েছে, যা ‘বিভ্রান্তিমূলক’।

হত্যাকাণ্ডের তদন্ত কার্যক্রমকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশ্যে তা প্রচার করা হচ্ছে দাবি করে এতে বলা হয়, “আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক যে কোনো জবানবন্দিই আইন অনুযায়ী অতি গোপনীয়, যা অন্য কারো জানার অবকাশ নেই।

“অথচ আদালতে দেয়া জবানবন্দির মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে একজন আইনজীবী তা উদ্ধৃত করে র‌্যাব সদর দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

সাত খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে র‌্যাব-১১ এর সাবেক অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদসহ তিন কর্মকর্তাকে আদালতের নির্দেশে গ্রেপ্তার করা হয়। এই তিনজনকে ইতোমধ্যে সামরিক বাহিনী থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তা এম এম রানা, তিনিও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ওই তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে এই মামলার তদন্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর আরিফ ও রানা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে এই দুজন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে র‌্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে এই কাজ করেছেন বলে বিভিন্ন সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়।

তার প্রতিবাদে পাঠানো বিবৃতিতে র‌্যাব আরো বলেছে, “একটি মহল র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তথা র‌্যাবের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।”

নারায়ণগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে র‌্যাবকে যুক্ত করার নির্দেশ রয়েছে হাই কোর্টের। তবে বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাদের বলা হয়েছে, সেই তদন্ত র‌্যাব চালিয়ে যাচ্ছে।

র‌্যাব বলেছে,“জবানবন্দিতে র‌্যাব সদর দপ্তরের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ থাকলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, এটাই নিয়ম।”

এই ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।