চট করে র‌্যাব বন্ধ করা সম্ভব না: শেখ হাসিনা

র‌্যাব বিলুপ্ত করার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দাবি নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2014, 01:30 PM
Updated : 31 May 2014, 02:08 PM

শনিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে চলতে চলতে এটা একটা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। চট করে বন্ধ করা সম্ভব না।”

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার পর র‌্যাব বিলুপ্তির দাবি তোলে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া।

এ বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দেয়ার সময় তদন্ত চলাকলে তিনজন র‌্যাব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করতে উচ্চ আদালতের আদেশ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন সরকার প্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, “হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কিভাবে অর্ডার দেয়, গ্রেফতার করেন। ওই জজ সাহেবের কাছে নিশ্চয়ই তথ্য আছে। দুই জাজের কাছে তথ্য থাকলে দিন। তদন্তের সহায়তা করুন।

“ওই বেঞ্চের জজ সাহেবরাই তদন্ত করবেন। তারাই বিচার করবেন।”

এসময় সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কী, কনটেম্প করবে? আমি পরোয়া করি না।”

“আমার কথা কঠোর হয়ে যাচ্ছে? বাস্তব কথা কঠোরই হয়,” বলেন শেখ হাসিনা।

এই প্রশ্নের আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় যে, তার সরকার র‌্যাব বিলুপ্ত করবে কিনা।

২০০৪ সালে র‌্যাব প্রতিষ্ঠার সময়ই তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা এর সমালোচনা করেছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “র‌্যাব একটা বাস্তবতা।”

বিএনপি-জামাত নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে ২০০১ সালে ‘অপারেশন ক্লিন হার্টে’ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ প্রায় দেড়’শো মানুষকে হত্যা করা হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগে রক্ষী বাহিনীর সমালোচকদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, “যারা রক্ষী বাহিনী, রক্ষী বাহিনী করল- তারাই র‌্যাব তৈরি করল।”

“র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর প্রথম পাঁচ বছরে প্রায় এক হাজার মানুষ হত্যা করা হয়,” বলেন প্রধানমন্ত্রী।

“তখন সকলে প্রশংসা করেছিল।”

শেখ হাসিনা বলেন, “দিনের পর দিন র‌্যাব যখন মানুষ হত্যা করেছিল তখন তো কেউ প্রশ্ন করেন নাই।”

কিশোরগঞ্জের সোনালী ব্যাংকের ১৬ কোটি টাকা উদ্ধার করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “র‌্যাব অনেক সেনসেশনাল ঘটনার সমাধান করেছে।”

নারায়ণগঞ্জের সাত খুন এবং ফেনীর একরাম হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে  সরকার প্রধান বলেন, “আমরা কিছু ঢাকি না। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। অপরাধী যে দলেরই হোক আমরা ছাড়ছি না।”

নারায়ণগঞ্জের সাত হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামী নূর হোসেন এবং সাংসদ শামীম ওসমানের কথিত কথোপকথন নিয়ে বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমের প্রতিবেদন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শেখ হাসিনা বলেন, “সে তো তাকে সারেন্ডার করতে বলেছিল।”

“অডিও আলাপের অথিনটিসিটি কতটুকু?” এই প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অপরাধ যদি প্রমাণ না করা যায়, তাহলে কাউকে অপরাধী বলা যায় না।”

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, নূর হোসেন জাতীয় পার্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে আসেন।

ফেনীতে একরাম হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্তরাও ‘বিপরীত ধারার রাজনীতি’ করতো বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।