জাপান সফর নিয়ে শনিবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “আমাদের মন্ত্রী তো ঠিকই বলেছেন। আইনগতভাবে যেটা বাস্তব, সেটা বলেছেন।”
আইনি জটিলতাকে কারণ দেখিয়ে জামায়াতের বিচার আপাতত সম্ভব নয় বলে মন্তব্যের পর বিভিন্ন মহল থেকে আইনমন্ত্রীর সমালোচনা হচ্ছে। বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আইনমন্ত্রীকে সময়ও বেঁধে দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ।
এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন পেলেন মন্ত্রিসভায় এই প্রথম স্থান পাওয়া আনিসুল হক।
জামায়াতের রাজনীতি বন্ধের পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে প্রশ্নে শেখ হাসিনাও আইনি জটিলতাকে কারণ দেখিয়ে বলেন, “সেটা উচ্চ আদালতে পেন্ডিং আছে। উচ্চ আদালতের রায় আসার আগে আমাদের কিছু করণীয় নেই।”
আনিসুল হকও শনিবার ঢাকা আইনজীবী সমিতিতে এক সভায় তার আগের অবস্থান ধরে রেখে বলেন, জামায়াতের বিচার করতে হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন সংশোধন করতে হবে।
“বর্তমান আইন সংশোধন না করে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামায়াতের বিচার সম্ভব নয়।”
তবে এতে আপত্তি জানানোদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, “জামায়াতের বিচার সঠিক সময়ে হবে। আইনের নিয়ম-নীতি মেনেই তাদের বিচার সম্পন্ন করা হবে। এ নিয়ে অধৈর্য হওয়ার কিছুই নেই।”
সরকারের প্রতি সবাইকে আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার আমরা যথাযথ নিয়ম মেনে শেষ করেছি। ১০০ বছর পরেও এ বিচারের মধ্যে কেউ কোনো ব্যত্যয় খুঁজে পাবেন না। জামায়াতের বিচারও সঠিকভাবে করা হবে।”
“যারা না বুঝে জামায়াতের বিচার এখনি চাচ্ছে, তারা বিচারকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়,” বলেন তিনি।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জামায়াতের সঙ্গে আঁতাত করার কোনো প্রশ্নই আসে না। আঁতাত করা হলে নিজামীর বিচার হত না।”
শেখ হাসিনার ২০০৯ সালে ক্ষমতা নেয়ার পর একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেয়। এরপর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মুজাহিদসহ কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড হয়; কারাদণ্ড হয় গোলাম আযমের।
যুদ্ধাপরাধের বিভিন্ন রায়ে জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল’ এবং একাত্তরে যুদ্ধাপরাধ সংঘটনে দলটির ভূমিকা উঠে আসার পর জামায়াতের বিষয়ে তদন্তও শুরু করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দল। এর মধ্যেই আইনমন্ত্রী জানালেন, আইন সংশোধন ছাড়া এই বিচার সম্ভবপর নয়।
গত বছর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার আদেশ হওয়ার পর নজরে আসে যে এর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আপিলের সুযোগ নেই।
এরপর গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের মধ্যে আইন সংশোধন করে আপিলের সমান সুযোগ রাখা হয়। ওই আপিলের রায়ে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড হওয়ার পর গত ডিসেম্বরে তা কার্যকরও হয়েছে। দণ্ডিত অন্যদের আপিল আপিল বিভাগে বিচারাধীন।