লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরদিন শনিবার অমিত শাহ যখন এনডিটিভিকে একথা বলছেন, তখন ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীও একই মত প্রকাশ করেন।
বিবিসির সংলাপে তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “সরকার পরিবর্তন হলে অনেক কিছু পরিবর্তন হবে- এটা অনেকে বলেন। আসলে ফরেন পলিসিতে পরিবর্তন আসে না।”
তিনি আশা প্রকাশ করেন, শেখ হাসিনার বর্তমান সরকারকে যেভাবে কংগ্রেস সমর্থন দিয়েছে, বিজিপিও দেবে।
নির্বাচনের প্রচারে কথিত বাংলাদেশি হটানোর স্লোগান তোলা মোদি সরকারের বিদেশ নীতি নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে।
এর মধ্যে নতুন সরকারের পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে অমিত শাহ বলেন, “বিদেশ নীতির বিষয়ে বড় কোনো পরিবর্তন প্রত্যাশা করবেন না।”
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, “আমরা জানি এই অঞ্চলে কারা আমাদের মিত্র, আর কারা ঝামেলা পাকায়।
“আমি এই মুহূর্তে বলতে পারি, আমাদের সরকার দেশের মর্যাদা এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে আপস করবে না।”
তার এই কথায় অনেকটাই স্পষ্ট বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতের নীতিতে তেমন পরিবর্তন আসছে না।
নতুন সরকারে অমিত শাহ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন বলে জোর আলোচনা রয়েছে। গুজরাটে মোদি সরকারের মন্ত্রী অমিত উত্তর প্রদেশে বিজেপির নির্বাচনের পুরো দায়িত্বে ছিলেন। আর এবারই এই রাজ্যে সবচেয়ে ভাল ফল করেছে বিজেপি।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আটকে থাকা স্থল সীমান্ত চুক্তি নিয়ে বিজেপি একসময় বিরোধিতা করলেও পরে তাদের সুর নরম হয়।
সর্বশেষ রাজ্যসভায় বিলটি উত্থাপিত হলে বিজেপি তার বিরোধিতা করেনি। তার আগে অবশ্য বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি দেখা করেছিলেন রাজ্যসভায় বিজেপির তখনকার নেতা অরুণ জেটলির সঙ্গে।
মোদির সরকারে অরুণ জেটলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হচ্ছেন বলেও আলোচনা চলছে।
মোদির বক্তব্য অনুযায়ী ভারতে আদৌ কোনো অবৈধ বাংলাদেশি আছে কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা তাদের রিকগনাইজ না করলে ভারত কিভাবে তাদের বাংলাদেশে পাঠাবে।”
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতায় পরিবর্তন এলে যদি কোনো ইস্যুতে বাংলাদেশকে চাপ দেয়াও হয়, তা মেনে নেয়া হবে না।
“চাপ তখনি আসে যখন তা মেনে নেয়া হয়। আওয়ামী লীগ কারো চাপের কাছে নত হয় না।”
এই সংলাপে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এখন আস্থার ঘাটতি আছে।
“গত কয়েক বছরে ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বন্টন, স্থল সীমান্ত ইত্যাদি বিষয়ে সম্পর্কের অভিজ্ঞতা ভালো না।”
সংলাপে ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের প্রকাশক শহীদুল্লাহ খান বাদল বলেন, “কংগ্রেস আর আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। আগের মতো আওয়ামী লীগ ভারত থেকে সমর্থন পাবে না।”