এক্ষেত্রে রোহিঙ্গা ঠেকাতে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও কক্সবাজারের ১৪টি উপজেলায় ভোটারদের তথ্য সংগ্রহে ব্যবহার করা হবে বিশেষ ফরম।
এছাড়া ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার হওয়া বন্ধেও সংশ্লিষ্ট সীমান্তবর্তী এলাকায় বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা থাকছে।
আসন্ন হালনাগাদ কার্যক্রম নিয়ে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি মন্ত্রণালয়য়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইসির সমন্বয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
আগামী ১৫ মে থেকে তিন ধাপে দেশজুড়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হবে। রোববার এ নিয়ে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব সিরাজুল ইসলাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাসহ মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকের বিষয়ে ইসির উপসচিব ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সুভাস চন্দ্র সরকার জানান, হালনাগাদ কার্যক্রম চলাকালে রোহিঙ্গা ও ভারতীয় নাগরিকদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে এবার ১৪টি উপজেলাকে বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভোটারদের যাচাইয়ে বিশেষ ফরমও ব্যবহার করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার যাচাইয়ে শনাক্তকারী হিসেবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি থাকবে। ইসির তদারকির পাশাপাশি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতাও নেয়া হবে।
সীমান্তবর্তী ওই ১৪ উপজেলা হচ্ছে- কক্সবাজারের সদর, চকোরিয়া, টেকনাফ, রামু, পেকুয়া, উখিয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী, বান্দরবানের সদর, আলিকদম, লামা, নাইক্ষংছড়ি এবং রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলা। এরআগে ১৩ টি এলাকাকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ধরা হলেও এবারে ওই তালিকায় নতুন যোগ হয়েছে কুতুবদিয়া উপজেলা।
ওই ১৫ উপজেলায় তথ্য সংগ্রহের পর বিশেষ কমিটি এসব ফরম যাচাই-বাছাই করবেন।
২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার তালিকা করা হয়। প্রতিবেশী দেশ থেকে রোহিঙ্গা ও বিভিন্ন 'বিদ্রোহী' সংগঠনের সদস্যদের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে- সন্দেহজনক এমন এলাকার তথ্য চেয়ে ওই সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তাও চায় ইসি।
পরে হালনাগাদের সময় ২০০৯ সালে কক্সবাজার ও পার্বত্য এলাকার প্রায় অর্ধ লাখ ভোটারের আবেদন বাতিল করা হয়। মৌলভীবাজারের পূর্বজুড়ি উপজেলায় আসামের 'বিদ্রোহী' সংগঠন উলফার ১০ সদস্যকে সনাক্ত করা হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে হালনাগাদের সময় গেলবছর প্রায় ১৬ হাজারেরও বেশি ভোটার হওয়ার আবেদন নাকচ করে দেয় বিশেষ কমিটি।
তিন ধাপে এবারের হালনাগাদ
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, ১৫ মে থেকে দেশব্যাপী ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। প্রথম ধাপে ১৮২ থানা নির্বাচন অফিস ও উপজেলায় ১৫ মে থেকে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১৫ জুন থেকে ২৪ জুন ২১৯টি উপজেলায় এবং তৃতীয় ধাপে ১১৩টি উপজেলায় ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ সেপ্টেম্বর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্যদের তথ্য সংগ্রহ চলবে। শেষ ধাপেই সিটি করপোরেশন এলাকায় ভোটার তালিকার কাজ করবে ইসি।
ইসি সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি বা এর আগে যাদের জন্ম হয়েছে তাদের ভোটার তালিকাভুক্ত করবে ইসি। এছাড়া ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারিতে যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি হয়েছে তারাও ভোটার হবে।
২০১৪ ও ২০১৫ সালের ভোটারযোগ্যদের নিয়ে হালনাগাদে এবার অন্তত ৪৬ লাখ ভোটার হতে পারে। এ কার্যক্রমের সময় মৃতদের বাদ দেয়ার পাশাপাশি স্থানান্তর, সংশোধন, বাদ পড়াদের অন্তর্ভূক্তিও চলবে বলে ইসি জানিয়েছে।