নারায়ণগঞ্জে অপহৃত ছয়জনের লাশ উদ্ধারের পর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে ডেকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 30 Apr 2014, 10:55 PM
বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, প্রবীণ আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ ছয়জনের ভাসমান লাশ পাওয়ার পর রাতে প্রতিমন্ত্রীকে গণভবনে ডেকে পাঠান প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন থেকে বেরিয়ে আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর। এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করা হবেই।”
একসঙ্গে সাতজনকে অপহরণ করে হত্যার পরও তা সরকারের জনপ্রিয়তার ওপর প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন,“এতে সরকারের জনপ্রিয়তা কমবে কেন?”
হত্যাকাণ্ডের পিছনে কী কারণ থাকতে পারে জানতে চাইলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়। রাজনৈতিক কারণে তাদের অপহরণ করা হয়নি।
“এই পর্যন্ত যতটুকু জানতে পেরেছি-ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, জমি-জমা দখল এবং বাড়ি-ঘর দখল-বেদখল নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশ ও জেদের জন্যেই এই অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।”
নিহতের আত্মীয়-স্বজনরাই এমনটি বলেছেন বলে জানান তিনি।
স্বল্প সময়ের মধ্যেই এ অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটন করা যাবে বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে গত রোববার নারায়ণগঞ্জ আদালতপাড়া থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে অপহৃত হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর নজরুলসহ পাঁচজন।
নজরুলের গাড়ির পেছনে আদালতপাড়া থেকে গাড়ি নিয়ে বের হওয়া আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক ইব্রাহিমও সেদিন থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
বুধবার শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসমান অবস্থায় নজরুল ও চন্দনসহ ছয়জনের লাশ পাওয়া যায়। নজরুলের গাড়িচালক জাহাঙ্গীরের সন্ধান এখনো মেলেনি।
নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি স্বামী অপহরণের পরপরই এজন্য নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নূর হোসেন এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো.ইয়াসিনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন।
নজরুলের পরিবারের করা মামলায় তাদের আসামিও করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“যাদের নাম এসেছে,তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।”
অপহরণের দিন নূর হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নজরুলের স্ত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন,“আমি এই ঘটনায় কোনোভাবে সম্পৃক্ত নই।”
এই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন,“এটা রাজনৈতিক কারণে ঘটেনি। যতদূর জেনেছি, জমিজমাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”