ছাড় পেলেন আফিল-মনিরুল

নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে পার পেয়েছেন দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে বিজয়ী দুই প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2014, 07:03 AM
Updated : 30 March 2014, 10:19 AM

৫ জানুয়ারির ভোটে যশোর-১ ও যশোর-২ আসনে বিজয়ী এই দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় তাদের বাদ রেখে দশম সংসদের সদস্যদের গেজেট প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন।

বিষয়টি আদালতেও গড়িয়েছিল। আদালত নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি নিষ্পত্তির আদেশ দিলে রোববার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।

চার নির্বাচন কমিশনারের স্বাক্ষরের পর দুপুরে আফিল ও মনিরুলের সংসদ সদস্য হওয়ার গেজেট প্রকাশ করা হয় বলে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তারা জানিয়েছেন, শুনানিতে ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ায় তা মঞ্জুর করে ও উচ্চ আদালতের রায় পর্যালোচনা করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগটি নিষ্পত্তি করছে ইসি।

৫ জানুয়ারির ভোটের আগে গতবছর ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী প্রকাশ্যে বক্তব্যে বলেন- “প্রতি কেন্দ্রে ১০০ জন কর্মী ভোটকেন্দ্র দখল করে নৌকা প্রতীকের জয় সুনিশ্চিত করতে হবে।”

এই বক্তব্যের জন্য দুই জনের বিরুদ্ধে গত ১ জানুয়ারি যশোরের প্রতিদ্বন্দ্বী এক প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট শাহীন-উল কবীর নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন।

৩ জানুয়ারি  কমিশনের পাঠানো এক প্রতিবেদনে নির্বাচনী তদন্ত কমিটি দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায়।

অভিযোগ হলে তাদের দণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ড এবং সর্বোচ্চ প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ছিল নির্বাচন কমিশনের।

এরপর আফিল-মনিরের ‘প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না’ জানতে চেয়ে ভোটের পর ৭ জানুয়ারি আলাদা কারণ দর্শাও নোটিস পাঠায় কমিশন। তারা নোটিসের জবাবও দেন ১৫ জানুয়ারি।

পরবর্তীতে শুনানির উদ্যোগ নেয়া হলে অভিযুক্তরা আদালতের শরণাপন্ন হন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনকে দুই সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগের নিষ্পত্তি করার আদেশ দেয় আদালত।

১৬ মার্চ আদালতের আদেশের কপি পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার দুই প্রার্থীর শুনানি নেয় কমিশন।

শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্াচন কমিশনারের অনুপস্থিতিতে রুটিন দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক। এছাড়া নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ ও মো. শাহনেওয়াজও উপস্থিত ছিলেন।

ইসির আইন কর্মকর্তারা জানান, লিখিত বক্তব্যে আফিল-মনির তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ‘মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে দাবি করেন।

ব্যক্তিগত শুনানিতেও একই বক্তব্য দেয়ার পাশপাশি অনিচ্ছাকৃত যে কোনো ধরনের ভুলের জন্য নির্াচন কমিশনের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন তারা, বলেন কর্কর্ারা।

প্রকাশ না করার শর্তে একজন নির্বাচন কমিশনার জানান, উচ্চ আদালতের দেয়া পর্বেক্ষণগুলোর আলোকে সংশ্লিষ্ট আইন-বিধি পর্লোচনা  এবং দুই প্রার্থীর লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য নিয়ে তাদের ক্ষমা মঞ্জুর করে নির্াচন কমিশন চলমান প্রসিডিং থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

দশম সংসদ নির্বাচনের এ দুই প্রার্থী ছাড়া সবার গেজেট প্রকাশ হয়েছে ৮ জানুয়ারি।

সংসদের প্রথম অধিবেশনও চলবে ৩ এপ্রিল পর্ন্ত। দ্রুত গেজেট হলে তিন দিনের মধ্যে শপথ নিয়ে এ অধিবেশনেই যোগ দেয়ার সুযোগ পাবেন আফিল-মনিরুল।