ইসলামী ব্যাংকের টাকায় জাতীয় সংগীত নয়: ইনু

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী ও যুদ্ধাপরাধীদের প্রতিষ্ঠানের টাকায় জাতীয় সংগীত গাওয়ার কর্মসূচি হতে পারে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2014, 08:56 AM
Updated : 18 March 2014, 10:12 AM

মঙ্গলবার বাংলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমি মনে করি টাকা ফেরত দেওয়া উচিত। আমি জানি না আমার কী হবে; ইসলামী ব্যাংকের টাকা দিয়ে জাতীয় সংগীত হবে না। টাকা ফেরত দেয়া হবে।”

বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানব পতাকা গড়ে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা নেয়ার পর লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমেও রেকর্ড গড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়।

২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সর্বাধিক গণজমায়েতে সমবেত কণ্ঠে এই জাতীয় সংগীত গাওয়া হবে। সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতায় এ আয়োজনের উদ্যোক্তা সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এ আয়োজনের পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য গত ১৪ মার্চ গণভবনে বিভিন্ন টেলিকম প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি ব্যাংক এবং বীমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তার চেক গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) নেতারাও ওইদিন প্রধানমন্ত্রীর হাতে সহায়তার চেক দেন, যাদের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তাও ছিলেন।

সংবাদমাধ্যমে ওই খবর প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক সমালোচনা হয়। একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামী সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে পরিচালিত ইসলামী ব্যাংকের টাকায় বাংলাদেশের এ বিশ্ব রেকর্ড গড়ার প্রয়োজন নেই বলেও মন্তব্য করেন অনেকে।  

যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা গণজাগরণ মঞ্চও জামায়াত সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বয়কটের দাবি জানিয়ে আসছে।  

বাংলা একাডেমির অনুষ্ঠানে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, “জাতীয় সংগীত গাওয়ার অনুষ্ঠানের প্রচারে একটি টিভিতে লাইভ প্রোগ্রাম আছে, সেখানে আমাকে থাকতে হবে। জানি জাতীয় সংগীতের অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকের টাকা নেয়ার বিষয়টি সমালোচিত হচ্ছে।”

তবে একইসঙ্গে তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা সরকারের ভুল ত্রুটি থাকতে পারে। কিন্তু অসাম্প্রদায়িক হওয়ার সেই সুযোগ, সেই ছায়াটা এই সরকারই দিচ্ছে।”

বিএনপি- আওয়ামী লীগ সংলাপের প্রসঙ্গ টেনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ইবলিশ আর ফেরেস্তাদের মধ্যে যেমন সংলাপ হতে পারে না, তেমনি গণতন্ত্রকামী ও জঙ্গিবাদীদের সঙ্গে কোনো সংলাপ হতে পারে না।

জনগণের উদ্দেশ্যে ইনু বলেন, “আপনি কার পক্ষ নেবেন, পাকিস্তানপন্থি জঙ্গিবাদীদের? নাকি বাংলাদেশপন্থি গণতন্ত্রকামীদের? আপনাদের মধ্য দিয়ে হাঁটার সুযোগ নেই।”

জাসদ সভাপতি মনে করেন, রাজনীতিবিদ কখনো মোল্লা হতে পারে না। আবার মোল্লা কখনো রাজনীতিবিদ হতে পারে না। তা করতে গেলে তা হবে ভণ্ডামি।

জঙ্গিবাদীরা আবার যে কোনো সময় মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে মন্তব্য করে ইনু বলেন, “আজ সময় এসেছে জঙ্গিবাদকে ঝেরে ফেলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার। হাসিনা সরকার সেই অসাম্প্রদায়িক চেতনার ছায়া আপনাদের এনে দিয়েছে।”

মোবাশ্বের আলী স্বর্ণ পদক-২০১৪ বিতরণ উপলক্ষে একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী এবং অর্থনীতিবিদ ও গীতিকার শোয়াইব আহমেদকে এবার এ পুরস্কার দেয়া হয়।

মোবাশ্বের আলী ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এমিরিটেস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।