মাইক থেকে ভেসে আসে ‘আলোর পথযাত্রী এখানে থেমো না’ গানে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান। রাতের নিস্তব্ধতায় কয়েক হাজার মোমবাতি জ্বেলে সমাজে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করার শপথ নেন উপস্থিত সবাই। নারীর প্রতি সব ধরনের বাধা অপসারণের দাবি তোলেন সমস্বরে। ‘রাষ্ট্র এবং পরিবারে/সমান হবো অধিকারে’- শ্লোগানে মুখরিত হয় চারপাশ।
শুক্রবার প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের শুরু হয় এভাবে।
‘আঁধার ভাঙার শপথ’ শিরোনামে এ কর্মসূচির আয়োজন করে ‘আমরাও পারি- নারী নির্যাতন প্রতিরোধ জোট’ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
রাত সাড়ে ১০টা থেকে আলোর পথযাত্রী গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। আলোচনা, শপথ বাক্যপাঠ এবং প্রতিবাদী গান ও নৃত্য পরিবেশনায় চলতে থাকে নারীর প্রতি নির্যাতন বন্ধের আহ্বান।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, আমরাও পারি’র চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমা শাহীন, নিজেরা করি’র পরিচালক খুশী কবির আলোচনায় অংশ নেন।
আফরোজ চুমকি বলেন, “বাংলাদেশে যেখানে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রী ও জাতীয় সংসদের স্পিকার নারী সেখানে নারীকে অবদমিত রাখা যাবে না। নারীদের এগিয়ে যেতে প্রয়োজন দক্ষতা ও শিক্ষা। নারী যখন তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তখন কোনো শক্তি তাদের সে পথকে রুদ্ধ করতে পারবে না।”
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, “নারীদের বের হওয়ার পথে রাতের বেলাকে নিষিদ্ধ করা হয়, তাদের নিরাপত্তার কথা বলে। কিন্তু নারীর জন্য কোনো সময় নিষিদ্ধ হতে পারে না। নারীরা যখন একসঙ্গে মিলিত হয় তখন কোনো অন্ধকারের শক্তি তাদের পথচলাকে রুদ্ধ করতে পারবে না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “নারীরা পুরুষদের সঙ্গে সমান প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা তারা করছে নিজেদের যোগ্যতায়।”
মোমবাতি প্রজ্বলন শেষে নারীদের ওপর সব ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার শপথবাক্য পাঠ করান সুলতানা কামাল।
অনুষ্ঠানে প্রবীণ নারীনেত্রী ও মানবাধিকারকর্মী লতিফা আখন্দ, আমরাও পারি সংগঠনের কর্মীরা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ছাত্রী হলের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরাও।