জঙ্গি ছিনতাই তদন্তে দুই কমিটি

প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে কনস্টেবলকে হত্যা করে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি এবং পুলিশ আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকও গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2014, 04:31 PM
Updated : 23 Feb 2014, 05:11 PM

রোববার ময়মনসিংহের ত্রিশালে নজিরবিহীন এই ঘটনা ঘটার পর এই কমিটি দুটি গঠন করা হয়। দুটি কমিটিকেই তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।  

পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল আহসান সাংবাদিকদের জানান, সিআইডির উপমহাপরিদর্শক মো. সাইফুল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই কমিটির সদস্য সচিব হচ্ছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি আব্দুল আলীম মাহমুদ এবং সদস্য হচ্ছেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।

এছাড়া অতিরিক্ত সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) এস এম মাহাফুজুল হক নুরুজ্জামান, ডিআইজি প্রিজন (সদর দপ্তর) টিপু সুলতান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব খায়রুল কবির মেনন এই কমিটিতে সদস্য হিসাবে আছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ইফতেখারুল ইসলাম খান।

দণ্ডিত ওই তিন জেএমবি জঙ্গিকে মামলায় হাজিরার জন্য গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ময়মনসিংহের আদালতে নেয়া হচ্ছিল।

পথে ত্রিশালে দুটি গাড়িতে এসে সংঘবদ্ধ একটি দল পুলিশের প্রিজন ভ্যানে বোমা মেরে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) গোলাম হায়দার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই ঘটনায় কারাগারের কারো কোনো যোগসাজশ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। 

“আসামিকে পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার পর ঘটনা ঘটেছে। এরপরও এই ঘটনার সঙ্গে কারাগারের কারো যোগসুত্র আছে কি না, তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি দেখবে।”

পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিরা হলেন- মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবি নেতা সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি, রাকিবুল হাসান এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মিজান ওরফে জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজান। এর মধ্যে রাকিবুল পরে টাঙ্গাইলে ধরা পড়েন। 

সাধারণত প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হলেও গুরুত্বপূর্ণ বন্দিদের ক্ষেত্রে সামনে পেছনে গাড়ি নিয়ে পুলিশের পাহারা থাকে।

ত্রিশালে যখন জঙ্গিদের ছিনিয়ে নিতে হামলা হয়, তখন প্রিজন ভ্যানে আলাদা কোনো পাহারা দেখা যায়নি।

এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে ইতোমধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে গাজীপুর পুলিশ।

গাজীপুর পুলিশ লাইনের সুবেদার আবদুল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যাহার করা হয়েছে সংরক্ষিত পরিদর্শক (আরআই) সাইয়েদুল করিমকে।

জঙ্গিদের ছিনিয়ে ছিনিয়ে নেয়ার সময় হামলায় কনস্টেবল আতিকুল ইসলাম (৩০) নিহত হওয়া ছাড়াও দুই পুলিশ সদস্য আহত হন।

একজন ধরা পড়লেও পলাতক বাকি দুই জঙ্গিসহ পুলিশের গাড়িতে হামলাকারীরা যাতে পালাতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। তিন জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে ইতোমধ্যে ২ লাখ টাকা করে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে।

ত্রিশালের ঘটনার পর ময়মনসিংহ ও আশেপাশের সব জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের সব কারাগারে নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়েছে, যেখানে আরো জঙ্গি বন্দি রয়েছেন।