পুলিশ মেরে প্রিজন ভ্যান থেকে জঙ্গি ছিনতাই

নজিরবিহীন এক ঘটনায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে এক কনস্টেবলকে খুন করে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়া হল।

নিজস্ব প্রতিবেদক ময়মনসিংহ ও গাজীপুর প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2014, 05:34 AM
Updated : 24 Feb 2014, 07:20 AM

নজিরবিহীন এক ঘটনায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে এক কনস্টেবলকে খুন করে তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেয়া হল।

রোববার সকালে ময়মনসিংহের ত্রিশালের এই ঘটনায় যাদের ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে, তারা তিনজনই জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য জানিয়েছে।

এদের মধ্যে সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি (৩৮) এবং রাকিবুল হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদ (৩৫) মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত। অন্যজন  জাহিদুল ইসলাম ওরফে বোমারু মিজান (৩৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত।

একটি মামলায় হাজিরার জন্য গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনজনকে ময়মনসিংহের আদালতে নেয়ার পথে ছিনতাইয়ের এই ঘটনা বাংলাদেশজুড়ে তোলপাড় তোলে।

ছিনতাইয়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে টাঙ্গাইলে ফের ধরা পড়েন রাকিবুল। অন্য দুজনকে গ্রেপ্তারে সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। তাদের ধরিয়ে দিতে ২ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

ছিনতাইয়ের সময় হামলায় নিহত হন প্রিজন ভ্যানে থাকা কনস্টেবল আতিকুল ইসলাম (৩০)। আহত হন আরো দুজন। ছিনতাইয়ে সহায়তাকারী হিসেবে ইতোমধ্যে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

ছাড়া পাওয়া দুই জঙ্গিসহ তাদের সহযোগীদের ধরতে ‘সর্বশক্তি’ নিয়োগ করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, শিগগিরই সবাইকে আটক করা সম্ভব হবে।

ছিনতাইয়ের এই ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি কমিটি গঠন করে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে গাজীপুরের দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

বন্দিদের মুক্ত করতে এই জঙ্গি হানার পর দেশের সব কারাগারে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কারাবন্দি জঙ্গিদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।  

পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার সাংবাদিকদের বলেছেন, “দেশে জঙ্গি তৎপরতা এখনো শেষ হয়নি। তবে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে।”

আল কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরির বাংলাদেশকে হুমকি দেয়ার মধ্যে জঙ্গিদের এই তৎপরতার পেছনে জামায়াতে ইসলামীর ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তবে জামায়াত নেতারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।  

এদিকে পুলিশকে মেরে জঙ্গিদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে তাদের ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া।

জঙ্গি ছিনতাই

সকালে একটি প্রিজনভ্যানে করে তিন জঙ্গিকে নিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে বের হয় পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ বন্দিদের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রিজন ভ্যানের সামনে-পেছনে পুলিশের গাড়ি থাকলেও এক্ষেত্রে ছিল না।

দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানান, সকাল ১০টার দিকে ত্রিশালের সাইনবোর্ড এলাকায় পৌঁছলে ভ্যানটির পথ আটকে গুলি করে ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ওই তিন জঙ্গিকে বের করে নিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা।

ভ্যানের সামনের সিটে বসা ছিলেন এসআই হাবিবুর রহমান ও কনস্টেবল সোহেল রানা। গাড়ি চালাচ্ছিলেন আরেক কনস্টেবল সবুজ। আর পেছনে কয়েদিদের রাখার বাইরের অংশে ছিলেন কনস্টেবল আতিকুল ইসলাম।

গুলিবিদ্ধ হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এসআই হাবিব জানান, হঠাৎ একটি ট্রাক ও কালো রংয়ের একটি মাইক্রোবাস প্রিজনভ্যানের সামনে ও পিছনে এসে পথ আটকে দাঁড়ায়। এরপর সামনে থেকে প্রিজন ভ্যানে গুলি ও বোমা ছোড়া হয়।

“সামনের কাচ ছিদ্র হয়ে আমার শরীরে দুটি গুলি লাগে। আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। তারপর আর কিছু মনে নেই।”

চালক সবুজ বলেন, “গুলির শব্দে মাথা নিচু করে ফেলেছিলাম বলে বেঁচে যাই। তারপর সামনের মাইক্রোবাস থেকে মুখোশধারী হামলাকারীরা এসে চাবি ছিনিয়ে নেয়।”

এরপর বোমা হামলা হয় ভ্যানের পিছনে, যাতে গুরুতর আহত হন কনস্টেবল আতিক। এরপর তালা ভেঙে ডাণ্ডাবেড়ি পরা তিন জঙ্গিকে বের করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা।

ত্রিশাল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার জানান, হাসপাতালে নেয়ার পথেই কনস্টেবল আতিক মারা যান।

রাকিবুলসহ আটক ৪

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানান, আসামি ছিনতাই হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ময়মনসিংহ ও আশপাশের জেলাগুলোতে ব্যাপক সতর্কতা নেয়া হয়। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মাঠে নামেন। সড়কে শুরু হয় তল্লাশি।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের সখিপুর পৌর এলাকায় প্রশিকা অফিসের কাছে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস থেকে চালক মো. জাকারিয়াকে (২৮) আটক করে পুলিশ।

তার বিরুদ্ধে ওই তিন জঙ্গি ছিনতাইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে জানিয়ে পুলিশ বলেছে, ওই গাড়িটি জঙ্গি ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল।

সখীপুর থানার ওসি মোখলেছুর রহমান জানান, কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস সখীপুরের পৌর এলাকার কাছে প্রশিকা এলাকায় একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়।

“ওই গাড়িতে পলাতক তিন জঙ্গি ছিল। দুর্ঘটনার পর আসামিরা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। আমরা সেখান থেকে গাড়ি চালক জাকারিয়াকে একটি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও ছয়টি ককটেলসহ গ্রেপ্তার করি।”

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহাফুজুল হক নুরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জাকারিয়া ওরফে মিলনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। চার বছর আগে তিনি কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পান।

এরই মধ্যে পলাতক জঙ্গিদের দেশত্যাগ ঠেকাতে সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাজশাহী ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন কারাগারে সাজাপ্রাপ্ত জেএমবি জঙ্গিরা থাকায় সতর্কতা বাড়ানো হয়। ঘোষণা করা হয় পুরস্কার।

বেলা আড়াইটার দিকে সখীপুরের প্রশিকা অফিস থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের তক্তারচালা এলাকা থেকে জঙ্গি রাকিবুল হাসানসহ দুজনকে আটক করা হয়।

টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম জানান, হেঁটে যাওয়ার সময় সন্দেহ হওয়ায় দুজনকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয় জনতা। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে একজন নিজেকে জেএমবি সদস্য রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহামুদ বলে স্বীকার করে।

“তার গলা, হাত ও পায়ে ডাণ্ডাবেড়ির দাগ ছিল। এর সঙ্গে সদ্য দাড়ি কামানো চেহারা দেখেই আমাদের সন্দেহ হয়।”

ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার জানান, আটক অন্যজন রায়হানের বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলায়। তিনিও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে জাকারিয়ার দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার স্ত্রী স্বপ্নাকে (২৩) টঙ্গীর গাজীপুরার সিকদারপাড়ার একটি বাড়ি থেকে আটক করা হয় বলে জানান টঙ্গী মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. আলমগীর।

বিকাল সোয়া ৩টার দিকে গাজীপুরার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে স্বপ্নাকে আটক করা হয়।

তদন্ত কমিটি ও সতর্কতা

প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে কনস্টেবলকে হত্যা করে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল আহসান সাংবাদিকদের জানান, সিআইডির উপমহাপরিদর্শক মো. সাইফুল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এই কমিটির সদস্য সচিব হচ্ছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি আব্দুল আলীম মাহমুদ এবং সদস্য হচ্ছেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক।

অতিরিক্ত সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) এস এম মাহাফুজুল হক নুরুজ্জামান, ডিআইজি প্রিজন (সদর দপ্তর) টিপু সুলতান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব খায়রুল কবির মেনন এই কমিটিতে সদস্য হিসাবে আছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ইফতেখারুল ইসলাম খান।

সাধারণত প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হলেও গুরুত্বপূর্ণ বন্দিদের ক্ষেত্রে সামনে পেছনে গাড়ি নিয়ে পুলিশের পাহারা থাকে। ত্রিশালে যখন জঙ্গিদের ছিনিয়ে নিতে হামলা হয়, তখন প্রিজন ভ্যানে আলাদা কোনো পাহারা দেখা যায়নি।

এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে ইতোমধ্যে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে গাজীপুর পুলিশ।

গাজীপুর পুলিশ লাইনের সুবেদার আবদুল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যাহার করা হয়েছে সংরক্ষিত পরিদর্শক (আরআই) সাইয়েদুল করিমকে।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “বাকিরা যাতে পালাতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। তাদের ধরতে আমরা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছি। আশা করি শিগগিরই সবাইকে আটক করা সম্ভব হবে।”

এ ধরনের আসামিদের আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে আগামীতে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।

ত্রিশালের ঘটনার পর রাজশাহী ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে জারি করা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতা।

পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহাফুজুল হক নুরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছিনতাই হওয়া ওই তিন জেএমবি সদস্যকে ধরিয়ে দিতে পারলে প্রত্যেকের জন্য ২ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, ত্রিশালের ঘটনার পর ময়মনসিংহ ও আশেপাশের সব জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মাঠে রয়েছেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে জেএমবির সাজাপ্রাপ্ত শতাধিক নেতাকর্মী রয়েছেন। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারাগারের অভ্যন্তর ও আশপাশের এলাকায় রেড এলার্ট জারি করে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।”

বিভিন্ন মামলায় দণ্ডিত তারা

ময়মনসিংহ আদালত পুলিশের পরিদর্শক শহীদ ফোরকান জানান, মুক্তাগাছা থানার ২০০৬ সালের একটি বোমা হামলার এজাহারভুক্ত আসামি ওই তিন জঙ্গি। ওই মামলায় শুনানির জন্য রোববার সকালে তাদের কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে ময়মনসিংহে আদালতে নেয়া হচ্ছিল।

কাশিমপুর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এর জেলার আব্দুল কুদ্দুস জানান, জেএমবির শুরা সদস্য সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানির বিরুদ্ধে ৪০টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে তিনটিতে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার রফিকুল ইসলামের ছেলে সালাউদ্দিন সালেহীন ২০০৬ সালের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে গ্রেপ্তার হন।

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হাবিবুর রহমান জানান, জেএমবির বোমা বিশেষজ্ঞ ও সামরিক শাখার প্রধান বোমারু মিজান ২০০৯ সালের ১৪ মে ঢাকার আগারগাঁও এলাকায় র‌্যাবের এক বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার হন।

কাশিমপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সুপার মো.জাহাঙ্গীর কবির জানান, মিজান জামালপুর সদরের শেখের ভিটা এলাকার সুজা মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা রয়েছে।

এর মধ্যে ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের আদালতে বোমা হামলার ঘটনায় তার ২৬ বছরের সাজা হয়। এছাড়া আরো চারটি মামলায় তার সাজার আদেশ হয়েছে।

জেএমবির আরেক শুরা সদস্য রাকিবুল জামালপুরের মেলান্দহ থানার বংশীবাড়ি গ্রামের আবদুস সোবাহানের ছেলে। ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বায়তুল মোকাররম এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

রাকিবুলের বিরুদ্ধে ৩০টি মামলার মধ্যে একটিতে ফাঁসির আদেশ হয়েছে বলে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান।

তিনি বলেন,এসব মামলার মধ্যে তিনটিতে রাকিবুলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড,একটিতে ১৪ বছর ও একটিতে সাত বছরের দণ্ডাদেশ রয়েছে।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা চালিয়ে সবার নজরে আসে জেএমবি। পরে সংগঠনটি নিষিদ্ধ হয়।

জেএমবির প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান, শীর্ষ নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ ছয় নেতাকে ঝালকাঠীর বিচারক হত্যাকাণ্ডের দায়ে ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ ফাঁসিতে ঝোলানো হয়।

তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর সালেহীন, রাকিবুল ও মিজান সংগঠনটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের দাবি।