কবি ফজল শাহাবুদ্দীন আর নেই

গত শতকের পঞ্চাশের দশকের কবি ও সাংবাদিক ফজল শাহাবুদ্দীন আর নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2014, 07:05 AM
Updated : 9 Feb 2014, 09:10 AM

দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

কবির জামাতা সাঈদ হোসেন জানান, বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কিছু দিন সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তিও ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হওয়ায় কয়েক দিন আগে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।

“সকালে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে মধ্য বাসাবোর বাসাতেই তিনি মারা যান।”

আসরের পর প্রেসক্লাবে প্রথম ও বিকাল ৫টায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে কবির দাফন হবে। 

ফজল শাহাবুদ্দীনের জন্ম ১৯৩৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, কুমিল্লার নবীনগরে। আধুনিক ধারার কবি হিসাবে পঞ্চাশের দশকে তিনি জনপ্রিয়তা পান। কাজ করেছেন সাংবাদিক হিসাবেও।

এক সময়ের সাড়া জাগানো সাপ্তাহিক বিচিত্রার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন ফজল শাহাবুদ্দীন। তার সম্পাদনায় এক সময় প্রকাশিত হতো সাপ্তাহিক সচিত্র সন্ধানী। সাপ্তাহিক চিত্রালী ও দৈনিক বাংলাতেও তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

কবিতার পত্রিকা ‘কবিকণ্ঠ’ প্রকাশিত হতো তারই সম্পাদনায়।

 

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ঘনিষ্ঠজন হিসাবে পরিচিতি এই কবি ঊনিশশ নব্বইয়ের দশকে এশীয় কবিতা উৎসব আয়োজনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় ছিলেন।    

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৮৮ সালে একুশে পদক পান।

১৯৬২ সালের জগন্নাথ কলেজের স্নাতক ফজল শাহাবুদ্দীনের প্রথম বই ‘তৃষ্ণার অগ্নিতে একা’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে।

অকাঙ্ক্ষিত অসুন্দর, আততায়ী সূর্যাস্ত, অন্তরীক্ষে অরণ্য, সান্নিধ্যের আর্তনাদ, আলোহীন অন্ধকারহীন, সনেটগুচ্ছ, অবনিশ্বর দরোজায়, আমার নির্বাচিত কবিতা, হে নীল সমুদ্র হে বৃক্ষ সবুজ, লংফেলোর নির্বাচিত কবিতা, দিকচিহ্নহীন, ছিন্নভিন্ন কয়েকজন, জখন জখম নাগমা, বাতাসের কাছে, ছায়া ক্রমাগত, নিসর্গের সংলাপ, পৃথিবী আমার পৃথিবী, ক্রন্দনধ্বনি ও ক্রমাগত হাহাকারসহ ২৭টি বইয়ের রচয়িতা তিনি। 

ফজল শাহাবুদ্দীনের সবশেষ কবিতার বই ‘একজন কবি একাকি’ প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে।

তার স্ত্রী আজমেরী শাহাবুদ্দীন একজন লেখক ও শিক্ষাবিদ।