এবার খরচের হিসাব দিতে হবে নতুন এমপিদের

দশম সংসদ নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ হওয়ায় বিজয়ী ও বিজিতদের ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের খতিয়ান জমা দিতে হবে।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2014, 07:38 PM
Updated : 9 Jan 2014, 07:41 PM

এবার প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয় ছিল সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা। ভোটার প্রতি সর্বোচ্চ ৮ টাকা ব্যয়ের সুযোগ ছিল।

ইসি সচিবালয়ের উপ সচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৮ জানুয়ারি নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশ করায় ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ব্যয়ের রিটার্ন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এবং এফিডেভিটের অনুলিপি ডাকযোগে ইসি সচিবালয়ে পাঠাতে হবে।”

বুধবার গেজেট প্রকাশের পর দশম সংসদ নির্বাচনে নবনির্বাচিত ২৮৪ জন বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। পাঁচজন অনুপস্থিত ছিলেন। বাকি আসনে ফলাফল স্থগিত রয়েছে।

মিহির সারওয়ার জানান, নির্ধারিত সময় এক মাসের মধ্যে ব্যয়ের হিসাব দাখিল করতে ব্যর্থ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত বিধান লঙ্ঘনে ২ থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ড, জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবে সংশ্লিষ্টরা।

রিটার্নিং কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট সব প্রার্থীকে এ বিষয়টি জানিয়েছে বলে জানান ইসির উপসচিব জানান।

এক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিজেই কমিশনের পূর্বানুমতি ছাড়াই আইন অমান্যকারী প্রার্থীর বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা করবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুসারে, প্রার্থীকে নির্বাচনী ব্যয় করার জন্য পৃথক একটি ব্যাংক হিসাব খোলা বাধ্যতামূলক। পৃথক ব্যাংক হিসাব থেকেই প্রার্থীকে নির্বাচনী ব্যয় করতে হয়। এছাড়া প্রতিটি খাতে ব্যায়ের ভাউচারসহ মোট হিসাব রিটানিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করারও বিধান রয়েছে।

দশম সংসদ নির্বাচনে ৫৪৩ জন প্রার্থী ছিলেন। এর মধ্যে ২৯২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ভোটে আওয়ামী লীগের ২৩১, জাতীয় পার্টির ৩৩, ওয়ার্কার্স পার্টির ৬, জাসদের ৫, জেপি ১, বিএনএফ ১, তরীকত ফেডারেশনের ১ জন এবং স্বতন্ত্র ১৪ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

৫ জেলায় সেনাবাহিনী থাকছে ভোট পর্যন্ত

নির্বাচনী কাজে সশস্ত্রবাহিনীর দায়িত্ব শেষ হল বৃহস্পতিবার। ৫৪ জেলায় আর ইসির কাজে সেনাবাহিনীর আর প্রয়োজন নেই বলে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ জানান।

তবে সরকার চাইলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে তাদের অবস্থান থাকতে পারে। বাকি ৫ জেলায় পুনভোটের কারণে সেনা মাঠে রাখতে চাইছে ইসি।

নির্বাচন কমিশন আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী কাজে সশস্ত্র বাহিনীর অবস্থানের সময়সীমা পার হলেও ৫ জেলার পুনভোটের আট সংসদীয় আসনে ১৬ জানুয়ারি পর‌্যন্ত তা বর্ধিত থাকছে।

রোববার দশম সংসদ নির্বাচন শেষ হয়। এ লক্ষ্যে ৫৯ জেলায় ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৯ জানুয়ারি পর‌্যন্ত ১৪৭ নির্বাচনী এলাকায় সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়। এ ১৫ দিন নির্বাচনী কাজে থাকায় ইসি সশস্ত্রবাহিনীর জন্য ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করে।

নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, “যে এলাকায় ভোট শেষ তাতে আর নির্বাচনী কাজে তারা থাকবে না। এখন সরকার যদি প্রয়োজন মনে করে সেনাবাহিনী থাকবে।

“তবে আটটি আসনে পুনঃভোট হওয়ায় নির্বাচনী কাজে সংশ্লিষ্ট ৫ জেলায় তারা অন্তত ১৮ জানুয়ারি (ভোটের দু’দিন পর) পরর্যন্ত মোতায়েন থাকতে পারে।”

নাশকতা-হামলায় দশম সংসদ নির্বাচনে স্থগিত হয়ে যাওয়া ৮ আসনে ৩৯২ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ হবে ১৬ জানুয়ারি। এতে মোট ভোটার ১০ লাখ ১০ হাজার ১২৮ জন।

এর মধ্যে দিনাজপুর-৪ আসনে ৫৭ টি, কুড়িগ্রাম-৪ আসনে ২টি, গাইবান্ধা-১ আসনে ৫৪টি , গাইবান্ধা-৩ আসনে ৮০টি, গাইবান্ধা-৪ আসনে ৭২টি, বগুড়া-৭ আসনে ৪৬টি , যশোর-৫ আসনে ৬০টি ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনে ২১টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রয়েছে।