৯৭ শতাংশ কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে: সিইসি

সব দলকে না পাওয়ার ‘আক্ষেপ’ নিয়েই প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ দাবি করেছেন, দশম সংসদ নির্বাচনে ৯৭ শতাংশ কেন্দ্রেই ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2014, 09:45 PM
Updated : 5 Jan 2014, 10:39 PM

নির্বাচন বর্জনকারী বিরোধী জোটের ভোট প্রতিহতের হুমকির প্রেক্ষাপটে রোববার সংঘাত-সহিংসতায় ২১ জনের মৃত্যুর মধ্যে ৫৯ জেলার ১৪৭ আসনে ভোটগ্রহণ চলে। গোলযোগের কারণে ভোট স্থগিত হয়েছে ৫৪০টি কেন্দ্রে।

দিনব্যাপী ভোটগ্রহণের পর ফলাফল প্রকাশের মধ্যে রাত আড়াইটায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সিইসি, জানান ভোটের বিভিন্ন তথ্য।

তখন পর্যন্ত ১৪৭ আসনের ভোটের সম্পূর্ণ ফল না আসায় ভোটের হার ও স্থগিত কেন্দ্রের পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানাতে পারেননি কাজী রকিব। 

“সহিংসতার কবলে পড়েছিল বেশ কিছু কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রের তথ্য আসছে। খসড়া হিসেবে বলা যায়, ৯৭ শতাংশ কেন্দ্রে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে।”

নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সন্তোষ জানালেও একে ‘প্রহসন’ আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবিতে হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। তারা বলছে, জনগণ এই ভোট প্রত্যাখ্যান করেছে।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বলেছিলেন, ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পড়লেই তারা সন্তুষ্ট হবেন।

“৪০ শতাংশ ভোট পড়লেই আমরা খুশি। গ্রেট ব্রিটেনেও এমন ভোট পড়ে। এটাকে সেখানে স্টান্ডার্ড বলা হয়।”

ইসি সচিব মোহাম্মদ সাদিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ১৮ হাজার কেন্দ্রের মধ্যে ৫৪০টি কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করতে হয়েছে। শতকরা হিসেবে তা ৩ ভাগ।

জয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ব্যবধান স্থগিত কেন্দ্রের ভোটারের চেয়ে বেশি হলে পুনরায় ভোটগ্রহণ হবে না বলে জানান তিনি।

যে সব আসনে ৫০টির বেশি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হয়েছে, সে সব কেন্দ্রে পুনরায় ভোট করার প্রয়োজন হবে কি না, কমিশন সভায় সেই সিদ্ধান্ত হবে।

নির্বাচনী সংঘাতে ২১ জনের প্রাণহানি এবং বিভিন্ন স্থানে শতাধিক কেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়ার মধ্যে সিইসি বলেছেন, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ভালোভাবে কাজ করেছে। যেভাবে ইসি চেয়েছে সেভাবে সহায়তা করেছে।

গোপালগঞ্জ শহরের মডেল স্কুল কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন।

ভোটের আগে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে নারাজ ছিলেন কাজী রকিব। ভোটের পর তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে আক্ষেপ প্রকাশ করেন।

“সবার অংশগ্রহণ হলে নির্বাচন আরো সুন্দর ও ভালো হতো। আমরাও চেয়েছিলাম সুন্দর নির্বাচন। এজন্য সময়ও নিয়েছিলাম।”

“ভেবেছিলাম প্রধান দুই রাজনৈতিক জোটের মধ্যে দুরত্ব কমে আসবে, সমঝোতা হবে। কিন্তু শেষটায় তা হয়নি। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে আমাদের কাজ শেষ করতে হয়েছে। এ নির্বাচনের জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। ত্রুটি করিনি।”

“সবাই পার্টিসিপেট (অংশ নিলে) করলে নির্বাচন আরো সুন্দর হত,” হতাশার সুর সিইসির কণ্ঠে।

বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে ‘মেরুদণ্ডহীন’ বললেও সিটি কর্পোরেশনসহ আগের বিভিন্ন নির্বাচন করার মাধ্যমে নিরপেক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন বলে দাবি করেন কাজী রকিব, যে নির্বাচনগুলোর অধিকাংশটিতে বিএনপি জয়ী হয়েছে।

ইসির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার সময় সিইসির সঙ্গে ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, ইসি সচিব মোহাম্মদ সাদিক, অতিরিক্ত সচিব সিরাজুল ইসলাম।