দণ্ড কার্যকর চান বিশ্বজিতের ভাই

পুরান ঢাকার দরজি দোকানি বিশ্বজিৎ দাস হত্যার রায়ে সন্তুষ্ট তার পরিবারের সদস্যরা। তবে রায়কে অর্থবহ করার স্বার্থে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর কার্যকরের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

আদালত প্রতিবেদকও শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2013, 09:49 AM
Updated : 6 August 2017, 01:00 PM

রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত বিশ্বজিতের ভাই উত্তম কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, তিনি এ রায়ে ‘মোটামুটি সন্তুষ্ট’। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে রায়ের কার্যকর চান তিনি।

দ্রুত কার্যকর করা না হলে এ রায়ের ‘কোনো অর্থ থাকবে না’ বলেও তিনি মন্তব্য করেন উত্তম।

আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের এক বছর দশ দিনের মাথায় বুধবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক এ বি এম নিজামুল হক আসামিদের আট জনের ফাঁসি ও ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদে দেন।

দণ্ডাদেশ পাওয়া ২১ আসামির সবাই আদালতপাড়া সংলগ্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগকর্মী ছিলেন।

আসামিদের মধ্যে ১৩ জন এখনো পলাতক থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে উত্তম কুমার বলেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।

মামলা চলাকালে আসামিপক্ষের কেউ কোনো ধরনের হুমকি দিয়েছে কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে উত্তম কুমার দাস বলেন, এ ধরনের কিছু এ পর্যন্ত ঘটেনি।

ফাইল ছবি

রায়ের পর শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ঘোষপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিশ্বজিতের বাবা ও মা।

এই রায় দ্রুত কার্যকর ও পলাতক আসামিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বাবা অনন্ত দাস।

২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধের মধ্যে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে একটি মিছিল থেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে বিশ্বজিৎকে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনার খবর ও ছবি সারা বিশ্বেই  আলোড়ন তোলে। 

হত্যাকাণ্ডের পর অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করে সূত্রাপুর থানায় মামলা করেন ওই থানার এসআই জালাল আহমেদ। এর তিনমাসের মাথায় গত ৫ মার্চ ২১ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক তাজুল ইসলাম। গত জুলাইয়ে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

উভয় পক্ষের জেরা ও যুক্তিতর্ক শেষে বুধবার জনাকীর্ণ আদালতে মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, “সামগ্রিকভাবে অপরাধের মাত্রা ও গভীরতা বিবেচনা করে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করলে ন্যায়বিচার সমুন্নত হবে বলে এ ট্রাইব্যুনাল মনে করে।

“বিশ্বজিতের বাবা অনন্ত চন্দ্র দাস পুত্রশোকে কাতর হয়ে আহাজারি করে ন্যায়বিচারের যে প্রত্যাশা করেছেন সেটিও দালিলিক বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষ্য দ্বারা সমর্থিত হয়েছে। যদিও পুত্রশোকের বেদনা আমৃত্যু তাকে তাড়া করবে।”