সেনাছায়ায় ফিরে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পান মোল্লা

সামরিক শাসনামলে রাজনীতির অধিকার ফিরে পাওয়া ছাড়াও সামাজিক জীবনে স্বাধীনতাবিরোধীদের প্রতিষ্ঠা পাবার নজির হয়ে থাকবেন ফাঁসির সাজা পেয়ে সদ্য মৃত যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লা। 

আশিক হোসেনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2013, 04:08 PM
Updated : 12 Dec 2013, 04:53 PM

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী আলবদর বাহিনীতে যোগ দিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ গণহত্যায় অংশ নেয়ার জন্য ফাঁসি হলো তার। 

বাম রাজনীতিতে হাতেখড়ি হলেও চরম ডানপন্থী রাজনীতিতে জড়িয়ে গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে অংশ নিয়ে তিনি পরিচিতি পান কসাই কাদের হিসেবে।

১৯৭৮ সালে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআর পরিচালিত রাইফেলস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান মোল্লা।

ওই প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেন এই যুদ্ধাপরাধী।

১৯৬৮ সালে তিনি ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং একই বছর স্নাতকোত্তর অধ্যয়ন করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের শহীদুল্লাহ হল শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন।

 

স্বাধীনতার পরে ১৯৭৭ সালে এই ইসলামী ছাত্র সংঘই ইসলামী ছাত্র শিবির নাম ধারণ করে; সে সময় তিনি এর নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতার কারণে মুক্তিযুদ্ধের পরপরই জামায়াতে ইসলামীর ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বাধীন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের পরিণতিতে জেনারেল জিয়াউর রহমান প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন এবং সামরিক ফরমান জারি করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। ১৯৭৬ সালে জামায়াতে ইসলামীর ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

জামায়াত পুনরায় রাজনীতি করার অধিকার ফিরে পেলে ১৯৭৭ সালে কাদের মোল্লা আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

১৯৮০ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক সংগ্রামে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে। এ সময় তিনি দলের ঢাকা মহানগর ইউনিটের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৬ এবং ১৯৯৬ সালে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুইবারই পরাজিত হন।

কসাই কাদের নামে পরিচিত এই মানবতাবিরোধী অপরাধীর জন্ম ১৯৪৮ সালের ২ ডিসেম্বর ফরিদপুরের আমিরাবাদ গ্রামে।  

১৯৬১ সালে আমিরাবাদ ফজলুল হক ইন্সটিটিউটে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়নে যোগ দেন।

১৯৬৬ সালে ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে বিএসসি প্রথম বর্ষে পড়ার সময় তিনি ছাত্র ইউনিয়ন ত্যাগ করে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘে যোগ দেন। ২য় বর্ষে পড়ার সময় তিনি কলেজ শাখার সভাপতির দায়িত্ব পান।