ভোটে আইন-শৃঙ্খলায় ব্যয় এবার চারশ কোটি টাকা

দশম সংসদ নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা, যার মধ্যে মূল নির্বাচন পরিচালনায় ব্যয় হবে ১৯১ কোটি টাকার মতো; বাকি প্রায় চারশ কোটি টাকা যাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায়।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2013, 04:44 AM
Updated : 12 Dec 2013, 04:44 AM

ভোটে সেনাবাহিনী মোতায়নের জন্য এবার ২৭ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরেছে। এছাড়া আনসারের জন্য ২০৬ কোটি টাকা, পুলিশের ১৪৭ কোটি টাকা, বিজিবির জন্য ১৫ কোটি টাকার বেশি ও কোস্টগার্ডের জন্য ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে বরে মনে করছে ইসি।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয় শাখা জানায়, ১৯ ডিসেম্বর আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক বৈঠকেই পুরো বিষয়টি নির্ধারণ করবে ইসি। কমিশনের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, দুই সপ্তাহের জন্য সেনা ও অন্তত ৫ দিনের জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন করা হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবারই নির্বাচন পরিচালনার চেয়ে নিরাপত্তায় ব্যয় হয় বেশি। ইতোমধ্যে নির্বাচনকে সামনে রেখে সশস্ত্রবাহিনী বিভাগসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চাহিদা পাঠানো হয়েছে। তবে সবকিছু নির্ভর করবে- কতো দিন ধরে মাঠপর্যায়ে তাদের মোতায়েন রাখা হয় তারওপর।

ইসির উপ সচিব মিহির সারওয়ার মোর্শেদ জানান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পরই আইন-শৃঙ্খলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে। যেসব এলাকায় প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন, সেখানে খরচ কমে আসবে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ভোট হবে ৫ জানুয়ারি। ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে মনোনয়ন প্রত্যাহার। এরপর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের তালিকা চূড়ান্ত হবে।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ভোটের আগে ১২ দিন [২০ ডিসেম্বর-৩১] মোতায়েন ছিল সশস্ত্রবাহিনী। সে সময় ভোটের আগে-পরে ৫ দিন পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, এপিবিএনসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাঠে ছিল।

ভোটের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ইসির চাহিদা অনুযায়ী [মেট্রোপলিটন এলাকার ভেতরে ও বাইরে, পার্বত্য এলাকায় সাধারণ-গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বিবেচনায়] নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, এবার ৩৭ হাজার ৭১১টি সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি সদস্য নিয়োজিত থাকতে পারে। প্রতি কেন্দ্রে ১৪ থেকে ১৬ জন করে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি থাকবে ভোটের দিন।

নির্বাচন পরিচালনায় ৭০ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬০০ সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, হাজার খানেক নির্বাহী ও বিচারকি হাকিম, আপিল ট্রাইব্যুনাল, ৫ লাখের মতো ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও অন্যদের ভাতা এবং নির্বাচনী সামগ্রী মিলিয়ে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে ইসির বাজেট শাখার ধারণা।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও পারিশ্রমিক বেড়ে যাওয়ায় তার অনুপাতে প্রতিবারই নির্বাচনী ব্যয় বাড়ছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ যে প্রাথমিক চাহিদাপত্র দিয়েছে, তাতে দশম সংসদ নির্বাচন ঘিরে সেনা মোতায়েনের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫২ হাজার ৭৯৫ টাকা ৪০ পয়সা। ভোটের সময় তারা পূর্ণাঙ্গ চাহিদাপত্র পাঠাবে বলেও ইসিকে জানিয়েছে।