তিনি বলেছেন, “পাবনার সাঁথিয়ার বনগ্রামের ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদেরকে গ্রেপ্তার না করে পুলিশ নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। এটা মানবাধিকার পরিপন্থি।
“কিন্তু ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত পুলিশ তা জানে, কোনো একটা অদৃশ্য কারণে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বনগ্রামে ওই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর ও মন্দির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
দোষীরা যে রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন গ্রেপ্তার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার দাবি জানান মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
পরিদর্শনের সময় মানবাধিকার কমিশনসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে একই দিনে সিপিবি, বাসদ, হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ ও জেলা বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে তারা বলেন, এ ঘটনাটিকে রাজনৈতিকভাবে না দেখে সঠিকভাবে তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার করা উচিত।
প্রতিনিধি দলে সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন ও হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবাগুলোর মধ্যে ১ বস্তা করে চাল বিতরণ করা হয়।
বনগ্রাম সাহাপাড়ার দশম শ্রেণির ছাত্র রাজীব সাহার (১৭) ফেইসবুক পাতায় মহানবীকে কটূক্তি করে স্ট্যাটাস দেয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শুক্রবার রাতে উত্তেজনা দেখা দেয়।
শনিবার রাজীব সাহার বাড়িসহ স্থানীয় হিন্দুদের অন্তত ৩৫টি বাড়ি, তিনটি মন্দির ও ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এতে আতঙ্কিত হিন্দুরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়।
ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত তিনটি মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে আতাইকুলা থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন করেন থানার এসআই আব্দুল হালিম।
এর আগে হামলার রাতেই কথিত কটূক্তিকারী রাজীব সাহার বাবা বাবলু সাহা ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরো ২০০/৩০০ জনের বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি দায়ের করেন।
এছাড়া আতাইকুলা থানা পুলিশ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করে ওই থানায়।
এই তিন মামলায় এ পর্যন্ত মোট নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা এজহারভুক্ত আসামি বলে পুলিশ দাবি করলেও বাবলু সাহা বলেন, তার মামলায় ২০ জনের মধ্যে কেউই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি।
বুধবার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার ও র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান।