বুদ্ধিজীবী হত্যা: দুই ‘বদর নেতার’ রায়ের অপেক্ষা

একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার মামলায় সেই সময়ের ‘বদর নেতা’ পলাতক আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের রায় হবে রোববার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2013, 05:24 AM
Updated : 3 Nov 2013, 02:36 AM

১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার নীলনকশায় স্বাধীনতার ঠিক আগে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ট্রাইবুনাল-২ গত ৩০ সেপ্টেম্বর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন।

এ মামলার দুই তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ প্রসিকিউশনের পক্ষে মোট ২৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ১৫ জুলাই প্রথম সাক্ষী হিসেবে নিজের জবানবন্দি উপস্থাপন করেন শহীদ অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমেদের ভাগ্নি মাসুদা বানু রত্না।

চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের অনুপস্থিতিতেই গত ২৪ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের ১১টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে গত ২৮ এপ্রিল আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাঈনুদ্দীনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল। আর এ মামলার প্রসিকিউটরের দায়িত্বে রয়েছেন শাহিদুর রহমান।

এতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ১১ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের ‘দায়িত্বপ্রাপ্ত’ আলবদর বাহিনীর ‘চিফ এক্সিকিউটর’ ছিলেন আশরাফুজ্জামান খান। আর চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ছিলেন সেই পরিকল্পনার ‘অপারেশন ইনচার্জ’।

ওই সময় তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নয় জন শিক্ষক, ছয় জন সাংবাদিক ও তিনজন চিকিৎসকসহ ১৮ বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করেন বলে অভিযোগ এনেছে প্রসিকিউশন।

তারা দুজনেই জামায়াতে ইসলামীর তখনকার সহযোগী সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা ছিলেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে ‘সক্রিয় অবস্থান’ নেন।

আশরাফুজ্জামানের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বেজড়া ভাটরা (চিলেরপাড়) গ্রামে। আর চৌধুরী মাঈনুদ্দীনের বাড়ি ফেনীর দাগনভুঞার চানপুরে।

বর্তমানে আশরাফুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রে এবং চৌধুরী মুঈনুদ্দীন যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।

গত ২ মে আশরাফুজ্জামান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। সম্ভাব্য ঠিকানায় তাদের পাওয়া যায়নি বলে প্রসিকিউশন বিভাগ জানানোর পর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারকে দুটি জাতীয় দৈনিকে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১০ দিনের মধ্যে আশরাফুজ্জামান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে তারা আদালতে হাজির না হওয়ায় তাদের অনুপস্থিতিতেই মামলার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে আবুল কালাম আযাদের অনুপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালে তার বিচার হয়। যুদ্ধাপরাধের দায়ে তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছে।