নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যেই ভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 30 Oct 2013, 08:27 AM
কমিশন মনে করছে, জানুয়ারির প্রথমার্ধই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ মঙ্গলবার বলেছেন, দুয়েক দিনের মধ্যে আচরণবিধি চূড়ান্ত করে তফসিলের সময়সূচি নিয়ে বসবেন তারা।
“কমিশন সভায় ভোটের সময়সূচি নিয়ে আলোচনা হবে। ৪৫-৫০ দিন সময় রেখেই তফসিল ঘোষণা করা হবে।”
সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে, যার দিনগণনা শুরু হয়েছে ২৭ অক্টোবর থেকে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, গত নয়টি সংসদ নির্বাচনের মধ্যে কেবল সর্বশেষ নির্বাচনটি হয়েছে ডিসেম্বর মাসে, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর। ওই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল ২ নভেম্বর।
ওই নির্বাচন ২০০৭ সালে জানুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর দুই বছর আটকে থাকে ভোটের আয়োজন।
বাংলাদেশে প্রথম থেকে নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে যথাক্রমে- ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ, ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৬ সালের ৭ মে, ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ, ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর ও ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮।
সব দলের অংশগ্রহণ নশ্চিত করতে নবম সংসদ নির্বাচনের জন্য এম এ আজিজ কমিশন ৫ বার তফসিল পরিবর্তন করে। এটিএম শামসুল হুদার বিগত কমিশনও তিন বার তফসিল বদলানোয় মনোনয় দাখিলের সময় বাড়ে প্রার্থীদের।
দশম সংসদ নির্বাচনও জানুয়ারির প্রথমার্ধে করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে ইসি সচিবালয়। কেনান ভোটের সময় ঝামেলা হলে ভোটগ্রহণ বন্ধ করাসহ নানা ব্যবস্থা নিতে হয়। পরে সেসব কেন্দ্রে আবারো ভোট নিতে হয়। এসব কারণে ভোটের পরও কিছু সময় হাতে রাখতে হয় বলে কর্মকর্তারা জানান।
একজন নির্বাচন কমিশনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাস্তবতা বিবেচনায় সংসদ নির্বাচনের শেষ দিকে অন্তত সপ্তাহ দুয়েক সময় হাতে রাখতে হবে। ৪৫-৫০ দিন সময় রেখে জানুয়ারির দ্বিতীয়ার্ধের আগেই ভোট করতে চাইলে নভেম্বরের মাঝামাঝি অথবা ডিসেম্বরের শুরুতেই তফসিল ঘোষণার কথা বিবেচনা করতে হবে।”
ইসি কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসাবে সব নির্বাচনী এলাকার ভোটার তালিকা এবং প্রয়োজনীয় আইন-বিধি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (আরপিওর সঙ্গে সমন্বয় রেখে আচরণবিধি, নির্বাচন পরিচালনাবিধি এবং মনোনয়নপত্র, ফরম, প্যাকেট) মুদ্রণ শেষ করতে হবে তফসিলের আগেই।
দ্রুততার সঙ্গে এগোলে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে এসব শেষ করা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।
তফসিল ঘোষণার আগেই ৪০ হাজারেরও বেশি ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ, নতুন দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকাও চূড়ান্ত করতে হবে।
আইন-বিধি সংশোধন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শের কাজ এখনো শেষ না হলেও কমিশন উদ্যোগী হলে নভেম্বর মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে সব গুছিয়ে নেয়া সম্ভব বলে কমিশন কর্মকর্তারা মনে করছেন।
সরকার পদ্ধতি নিয়ে সরকারি ও বিরোধী জোটের বিপরীতমুখী অবস্থানে রাজনৈতিক অস্থিরতা চললেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ১০ নভেম্বর থেকে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে মনোনয়ন বিক্রি শুরু করছে। অন্যদিকে বিরোধী দল বিএনপি বলে আসছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে তারা যাবে না।