সর্বোচ্চ শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়ায় আব্দুল আলীমের পঙ্গুত্ব খতিয়ে দেখা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
Published : 09 Oct 2013, 02:27 PM
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ও মুসলিম লীগ নেতা আব্দুল আলীমকে একাত্তরে হত্যা ও গণহত্যার জন্য আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়ার পর আদালত চত্বরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেন শাহরিয়ার কবির।
তিনি বলেন, দেশের শীর্ষ ১৫ যুদ্ধাপরাধীর একজন আব্দুল আলিম। আদালত তার পঙ্গুত্ব বিবেচনা করে রায় দিয়েছে।
“অথচ কিছু দিন আগে আলীম পালানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে শুনেছি। তিনি সত্যি সত্যি পঙ্গু কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার।”
ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বলেন, “যে দেশে জিয়াউর রহমান পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। সে দেশে রাজাকার আলিমের ফাঁসি হবে না কেন?”
রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার দাবি জানান তিনি।
এদিকে যুদ্ধাপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরেও আলীমের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম।
ফোরামের সহ সভাপতি এ কে এম শফিউল্লাহও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “তার [আলীম] যে জঘন্যতম অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে তাতে ফাঁসির নিচে কোনো দণ্ড হওয়া ঠিক নয়। নাৎসিদের কঙ্কাল এনে যদি ফাঁসিতে ঝুলানো যায় তাহলে আলীমকে নয় কেন?”
আলীমকে হুইল চেয়ারে করে ট্রাইব্যুনালে না এনে দড়ি বেঁধে টেনে টেনে আনা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন এই মুক্তিযোদ্ধা।
তিনি বলেন, “এ রায়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। আমরা হতাশ। ক্ষোভ প্রকাশ করছি। সরকারকে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে বলব।”
৪২ বছর পরেও যুদ্ধাপরাধীদের কাঠগড়ায় দাঁড়ানোকেই বড় বিজয় বলে মনে করেন তিনি।
স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল মুসলিম লীগের নেতা হিসাবে একাত্তরে জয়পুরহাটে রাজাকার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে হত্যা, গণহত্যা ও লুটতরাজের অপরাধে আবদুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
তার অপরাধ মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য হলেও বয়স ও পঙ্গুত্বের কথা বিবেচনায় নিয়ে ৮৩ বছর বয়সী এই যুদ্ধাপরাধীকে কারাদণ্ডের আদেশ দেয়ার কথা জানায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।