মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধু হিসেবে সম্মাননা নিয়ে তিনি বলেছেন, “আমি পশ্চিম বাংলার মানুষ হিসাবে লজ্জিত। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য যে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে পারতাম- তা পারছি না।”
“যে হাতে হাত রেখেছিলাম। এখন সে হাতে গ্লাভস্,” একাত্তরের কথা স্মরণ করে বলেন প্রণবরঞ্জন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে মঙ্গলবার সম্মাননা নেন এই ভারতীয়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে সম্মাননা নেয়া ৬০ জনের পক্ষে বক্তব্য রাখেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন প্রণবরঞ্জন রায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সহায়ক সমিতি ও শিল্পী-সাহিত্যিক-বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন এবং চিত্রপ্রদর্শণীর আয়োজনের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন।
মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা পাওয়া প্রণবরঞ্জন তার বক্তব্যের শুরুতেই মঞ্চে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘আমাদের ভগ্নি ও বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন।
“আমাদের বিশাল সম্মান দেয়া হচ্ছে। আমরা তখন যা করেছিলাম- তা আজকের দিনটাকে লক্ষ্য রেখে করিনি। আমরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য যা করেছি, তা নিজেদের চেতনা থেকেই করেছি।”
বঙ্গবন্ধু হত্যার পরের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “৭৫ এর পর আমরা হতাশ হয়েছিলাম। আমরা ভাবতে শুরু করেছিলাম, ৩০ লাখ শহীদের জীবন দান মনে হয় ব্যর্থ হতে যাচ্ছে।”
“কিন্তু, এখন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখেছে। এখন আর, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি না। বাংলাদেশ এখন বাংলাদেশের নজর রাখতে পারে।”
“আমরা বাংলাদেশের বন্ধু হয়ে থাকতে চাই,” বলেন প্রণবরঞ্জন।
পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের সহায়তায় এগিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আশা করি, এই অবস্থার অবসান হবে।”
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আলতাফ মাহমুদ, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, মনির চৌধুরী ও শহীদুল্লাহ কায়সারকে স্মরণ করেন প্রণবরঞ্জন রায়। একই সঙ্গে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামে শহীদ তার আত্মীয় অশ্বিনী চৌধুরী ও হরিদাস চৌধুরীকেও স্মরণ করেন।