সোমবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক মুক্ত আলোচনা শেষে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবির আন্দোলনকারীরা।
এর আগে দুপুরে জানা যায়, যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত কাদের মোল্লা এবং ফাঁসি চেয়ে প্রসিকিউশনের করা আপিলের রায় মঙ্গলবার দেয়া হবে।
মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার সাংবাদিকদের বলেন, “আজ রাত থেকে মঙ্গলবার কাদের মোল্লার রায় পর্যন্ত গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে থাকবে।”
গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার রায় হলে তা প্রত্যাখ্যান করে শাহবাগে আন্দোলন শুরু হয়।
নানা ঘটনা-প্রবাহের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি চলার পর ২১ ফেব্রুয়ারি টানা অবস্থানের ইতি টানা হয়। তারপর থেকে রায়ের আগের দিন থেকে অবস্থান চলছে।
এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে সরকার আইন পরির্বতন করে আসামির যে কোনো সাজার বিধান রেখে আইন সংশোধন করে। আগের আইনে যে কোনো রায়ের বিরুদ্ধে আসামির আপিলের সুযোগ থাকলেও খালাস না হলে আপিলের সুযোগ প্রসিকিউশনের ছিল না।
রাত ৯টার দিকে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, মঞ্চের নেতাকর্মীর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিচ্ছে তারা।
তবে খানিকটা বৃষ্টি হলে ১০টার দিকে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। মঞ্চের অন্যতম সংগঠক মারুফ রসুল বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হবে।
প্রত্যাশিত রায় না পেলে কী করবেন- মারুফ রসুল বলেন, “যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার যদি সর্বোচ্চ শাস্তি না হয়, তাহলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
এদিকে বিকালে মঞ্চের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার : বিদ্যমান অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়।
এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক আবুল বারকাত বলেন, জামায়াত তাদের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে মৌলবাদের অর্থনীতি কায়েম করেছে। জামায়াতের অর্থনীতির মুলে রয়েছে ব্যাংক-বীমা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্য, রিয়েল স্টেট, আইটি মিডিয়া প্রভৃতি।
গত ৪০ বছর ধরে জামায়াত মোট ১ লাখ কোটি টাকা মুনাফা করেছে দাবি করে তিনি বলেন, এতে করে দেশের মূল অর্থনীতিকে গ্রাস করে ফেলছে তারা।
ওই অর্থ দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অধ্যাপক বারকাত।
ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক হাফিজুর রহমান কার্জন সভায় অংশ নেন।