রক্ষা পায়নি তাইন্দংয়ের বৌদ্ধবিহারও

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলায় এক বাঙালি মোটরসাইকেল চালককে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দুর্বৃত্তদের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি দুটি বৌদ্ধ বিহারও।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিনুরুল আজম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2013, 11:54 AM
Updated : 7 August 2013, 03:07 AM

শনিবার তাইন্দংয়ের পাহাড়ি বসতিতে হামলার পাশাপাশি সর্বেশ্বরপাড়া জনশক্তি বৌদ্ধ বিহার ও মনুদাস পাড়া বৌদ্ধ বিহারেও ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

শনিবার দুপুরে মোটরসাইকেল চালক মো. কামাল উদ্দীনকে (৩২) অপহরণের গুঞ্জন শুরু হলে দুর্বৃত্তরা পাহাড়ি বসতিতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। এক পর্যায়ে অনেক পাহাড়ি ফেনী নদী পার হয়ে সীমান্তের ‘নো-ম্যানস ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেন।

পরে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে তারা বসত ভিটায় ফিরে আসেন। তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রীও দেয়া হয়।

সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জেলা পুলিশ সুপার শেখ মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কামাল অপহরণের ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। ইতিমধ্যে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করা হয়েছে।

সোমবার সর্বেশ্বরপাড়া জনশক্তি বৌদ্ধ বিহারে গেলে বিহারের পরিচালক শুভদর্শী ভিক্ষু জানান, ঘটনার দিন দুর্বৃত্তদের আক্রমণের মুখে পাড়ার অনেকের সঙ্গে তিনিও পালিয়ে যান। রোববার সন্ধ্যায় বিহারে ফিরে এসে তিনি বিহারে হামলা ও ভাংচুরের দৃশ্য দেখতে পান।

১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিহার এলাকার চাকমাদের কাছে ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

মনুদাস পাড়া বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে দেখা যায় সেখানের বৃহৎ বুদ্ধমূর্তিটির ডানহাত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।

বিহারের পরিচালক নন্দপ্রিয় ভান্তে জানান, বিগত বিএনপি সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে এ বিহার নির্মিত হয়। বিহারে হামলার ঘটনা খুবই দুঃখজনক।

সর্বেশ্বরপাড়া বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনকালে পলাশপুর বিজিবি জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শিহাব উদ্দীন শোয়াইব  জানান, মঙ্গলবার বৌদ্ধ বিহারটি পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে।

তাইন্দং ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম জানান, ঘরবাড়ি পোড়ানোর সঙ্গে বৌদ্ধ বিহারে তাণ্ডব চালানো চরম অমার্জনীয় এবং দুঃখজনক। তিনি বৌদ্ধ বিহার দুটি সংস্কার এবং পুনর্নির্মাণে সরকারি সহযোগিতা কামনা করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান তাইন্দং সহিংসতায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারেরও দাবি জানান।