মাটিরাঙায় তাণ্ডব: কামালসহ সাতজন গ্রেপ্তার

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় বাঙালি মোটরসাইকেল চালককে অপহরণের খবরে পাহাড়ি গ্রামে হামলা অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়াও সেই মোটরসাইকেল চালক কামাল উদ্দীনকেও আটক করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2013, 11:01 AM
Updated : 6 August 2013, 11:01 AM

শনিবার কামাল উদ্দীনকে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর উপজেলার তাইন্দং এ পাহাড়ি গ্রামে আগুন, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় অনেক পাহাড়ি ফেনী নদী পার হয়ে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে আশ্রয় নেয়। পরে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে বসতভিটায় ফিরতে শুরু করেন তারা।

মাটিরাঙা থানার ওসি মাঈন উদ্দিন জানান, সোমবার দুপুরে হামলা অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অনিল চাকমা বাদী হয়ে মাটিরাঙা থানায় ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে প্রায় ১৭৫  জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ওই মামলার এক নম্বার আসামি কামালকে সোমবার রাতে মাটিরাঙা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া ওই রাতেই এজাহারভূক্ত আসামি মনির হোসেন, আমির হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঘটনার সন্দেহভাজন হিসাবে রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয় স্থানীয় আবেদ আলী মেম্বার, আবু হানিফ মেম্বার ও কামরুজ্জামানকে।

এ সাতজনকে মঙ্গলবার মাটিরাঙা থেকে খাগড়াছড়ি নিয়ে আসা হয়েছে। তাদেরকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান ওসি মাঈন উদ্দিন।

জেলা পুলিশ সুপার শেখ মিজানুর রহমান আটক সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের সত্যতা স্বীকার করে জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অাদালতে পাঠানো হবে। কামাল অপহরণের ঘটনটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক। এ তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে।

এলাকার পরিস্থিতিও শান্ত রয়েছে। দায়ীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

বিজিবি জামিনিপাড়া জোনের কমাণ্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ শিহাব উদ্দীন শোয়েব বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তাণ্ডবের ব্যাপারে বলেন, “পুলিশ সরাসরি ঘটনাটি তদন্ত করছে। তারা কিছু তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে এবং সেখানে আসলে কী ঘটেছে তাও জানতে পারছে। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসা ঘটনা সত্য বলেই মনে হচ্ছে।”

বিজিবি ঘটনাস্থলে শুধু আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জানিয়ে এ বিজিবি কমান্ডার বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। 

শনিবার বেলা ১২টার দিকে ভাড়ায়চালিত মোটর সাইকেলচালক  মো. কামাল উদ্দীন (৩২) তাইন্দংয়ের বান্দরসিং এলাকা থেকে অপহৃত হন বলে এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় বাঙালি অধিবাসীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

এরই এক পর্যায়ে তাইন্দংয়ের বান্দরশিং পাড়া, বগা পাড়া, মনুদাস পাড়া, সর্বস্ব পাড়া ও লাকু হেডম্যান পাড়ায় চাকমা ও ত্রিপুরাদের ছয়টি গ্রামের প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়িতে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট হয়।

পরে তাইন্দংয়ের নোয়াপাড়া এলাকা থেকে মোটরসাইকেল চালক কামালকে আহত অবস্থায় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে হামলা অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কয়েকশ পাহাড়ি পরিবার আতঙ্কিত হয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ আশ্রয় নেয়। পরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে তারা বাড়ি ফেরেন।