যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক মিল্কিকে হত্যার সময় ধোঁকা দিতে তারই সংগঠনের নেতা এম এ জাহিদ সিদ্দিকী তারেক পায়জামা-পাঞ্জবি ও টুপির ছদ্মবেশ নিয়েছিলেন।
Published : 31 Jul 2013, 05:24 PM
জাহিদ সিদ্দিকী তারেক ও রিয়াজুল হক মিল্কি
শপার্স ওয়ার্ল্ডের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ধরা পড়ে ওই হত্যাকাণ্ডের চিত্র।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এটিএম হাবিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভিডিওতে হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়- তারেক বাঁ হাতে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে দ্রুত মিল্কির খুব কাছে এসে ডান হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলি ছোড়েন।”
এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, তারেকের দ্রুত হাঁটার দৃশ্য দেখে প্রাথমিকভাবে যে কারো মনে হবে, খুব ব্যস্ত একজন পথচারী কোনো প্রয়োজনে দ্রুত হাঁটছেন।
“মূলত গাড়ি থেকে নেমে আসা মিল্কিকে বুঝতে না দেয়ার জন্য তারেক এ কৌশল নেন।”
ছদ্মবেশধারী তারেক মিল্কির কাছে এসে প্রথম গুলি ছোড়েন। তাতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মিল্কি। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য করা হয় দ্বিতীয় গুলি।
হাবিবুর রহমান বলেন, “এমন অনেক ঘটনা আছে যে, প্রথম গুলি ‘মিস’ হলে সন্ত্রাসীরা টার্গেটকে আর হত্যা করতে পারে না। এ ধরনের ধারণা থেকেই হয়তো তারেক ছদ্মবেশ নিয়েছিলেন।”
তারেক বাঁ হাতের খোলা মোবাইলে কাউকে গুলির শব্দ বা মিল্কির আর্ত চিৎকার শোনাচ্ছিলেন কি না জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান বলেন, অসুস্থ তারেককে এ বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করা হয়নি।
“বাঁ কানে মোবাইল ধরে রাখার পেছনে এ রকম কারণও থাকতে পারে। এ বিষয়টি পরে খতিয়ে দেখা হবে।”
ওই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি এখনো উদ্ধার করা যায়নি জানিয়ে র্যাব পরিচালক বলেন, এ ঘটনায় র্যাবের হাতে আটক সবাইকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
গুলশান থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মিল্কির ছোট ভাই মেজর রাশিদুল হক খান বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে একটি মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত সাত জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারেক ছাড়া বাকি ছয় জনকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডেও নিয়েছে পুলিশ।
এছাড়া মিল্কি হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠায় ঢাকা মহানগর যুবলীগের (দক্ষিণ) যুগ্ম সম্পাদক জাহিদ সিদ্দিকী তারেক ও ঢাকা মহানগর যুবলীগের (উত্তর) সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চলকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
চঞ্চলও এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবলীগ নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারেক এক সময় মিল্কির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তবে গুলশান-বাড্ডা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, তিনি এখন তারেকের ঘনিষ্ঠ। মিল্কি রাতে ওই এলাকায় ঢুকেছে বলে খবর পাওয়ার পরপরই প্রতিপক্ষ তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়।