‘তরুণ উদ্ভাবক’ এখন ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত

ক্রেডিট ‍কার্ড জালিয়াতি করে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে কোটি টাকা তুলে নেয়ার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 July 2013, 10:39 AM
Updated : 24 July 2013, 11:26 AM

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- মো. সেলিম, আরিফ হোসেন খান, মঞ্জুরুল হক ও আসাদুল ইসলাম।

মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশান, উত্তরা ও মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মনিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার চারজনের মধ্যে সেলিম ১৯৮৯, ১৯৯০, ও ১৯৯১ সালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে ‘তরুণ উদ্ভাবক’ হিসাবে প্রায় ১৪ লাখ টাকা পুরস্কার পেয়েছিলেন। এখন তিনি ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ড প্রতারক চক্রের অন্যতম প্রধান।

রংপুরের কারমাইকেল কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষে ১৯৯৫ সালে সাইটেক ইলেকট্রনিক্সে যোগ দেন সেলিম। ২০০০ সালে যোগ দেন টেক্সাস ইলেকট্রনিক্সের এটিএম বিভাগে।

এরপর ডাচ বাংলা ব্যাংকের গ্রাহকদের তথ্য চুরি করে জালিয়াতি করতে গিয়ে জেলে যান তিনি। ২০০৮ সালে জেল থেকে বেরিয়ে আরেকটি কোম্পানির ‘এটিএম রিপেয়ার’ (মেরামত) বিভাগে যোগ দেন। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইটি কর্মকর্তা হিসেবেও সেলিম দায়িত্ব পালন করেন।  

গ্রেপ্তার সেলিমের স্ত্রী আয়েশা বেগম আশা টেলিফোনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফেনসিডিলের টাকা জোগাড় করতে গিয়েই তার স্বামী অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার আরিফ হোসেন খানও কাজ করতেন সেলিমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। এক সময় তারা একসঙ্গে চাকরিও করেছেন। তবে ফেনসিডিল আসক্ত হবার পর চাকুরিচ্যুত হন।

এরপর থেকেই তারা ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে জড়ান বলে ডিবি কর্মকর্তা মনিরুল জানান।

তিনি বলেন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের আইটি বিভাগের কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম ও তার সহযোগী আসাদুলও বিভিন্ন সময়ে সেলিম ও আরিফকে সহযোগিতা করতেন।

“গ্রেপ্তাররা বিভিন্ন সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করে দুই কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে। ডাচ বাংলা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের গ্রাহকেরা এ প্রতারণার শিকার হয়েছেন।”

মনিরুল বলেন, এই চক্রে আরো কেউ আছে কিনা- গোয়েন্দারা তা খতিয়ে দেখছেন।

গ্রেপ্তার চারজনকে আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।