‘গোলাম আযম কেন হাসপাতালে’

যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত গোলাম আযম কেন হাসপাতালে রয়েছেন, তার ব্যাখ্যা নেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছেও।

নুরুল ইসলাম হাসিববিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 July 2013, 08:09 AM
Updated : 17 July 2013, 11:21 AM

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গোলাম আযমকে হাসপাতালে রাখা হচ্ছে বলে কারা কর্তৃপক্ষ বললেও বিএসএমএমইউ’র পরিচালক বলেছেন, বয়সজনিত সমস্যা থাকলেও জামায়াত নেতার বড় কোনো রোগ নেই।

গোলাম আযম নিয়মিত রোজা রাখছেন এবং হাঁটাচলাও করছেন বলে বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল মজিদ ভূইয়া।

দুদিন আগে ৯০ বছর কারাদণ্ডের রায়ের পর ৯১ বছর বয়সি গোলাম আযমের স্বাস্থ্যগত অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানান তিনি।

জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযমের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাজা মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত হলেও বয়স ও অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে তাকে সেই সাজা দেয়নি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

দেড় বছর আগে গ্রেপ্তারের পর থেকে গোলাম আযম রয়েছেন বিএসএমএমইউর প্রিজন সেলে। সেখান থেকেই তাকে মামলার শুনানিতে ট্রাইব্যুনালে নেয়া হত তাকে।

গোলাম আযম ট্রাইব্যুনালে সব সময় হুইল চেয়ারে গেলেও প্রিজন সেলে প্রতিদিনই হাঁটাচলা করেন বলে জানান মজিদ ভূইয়া।

হাসপাতালে গোলাম আযম রয়েছেন দুই শয্যার একটি কেবিনে, এর সঙ্গে বাথরুমও রয়েছে। এর শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রটি এখন অকার্যকর হলেও বৈদ্যুতিক পাখা রয়েছে।

হাসপাতালে কেবিনের একজন রোগী যেসব সুবিধা পান, তার সবই পান যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত এই ব্যক্তি।

মজিদ ভূইয়া বলেন, গোলাম আযম রোজা রাখছেন, সেহরি খাচ্ছেন, নিয়মিত নামাজও পড়ছেন।

“এমনকি খাওয়ার পর নিজের হাতেই সব পরিষ্কার করেন তিনি।”

রোজার আগে দিনে পাঁচ বার খাবার দেয়া হত গোলাম আযমকে, এর মধ্যে তার প্রিয় ছোট মাছের তরকারিও রয়েছে।

রোজা শুরু হওয়ার পর ইফতারিতে খেজুর ও ফলের রস পান তিনি। এছাড়া রাতে ও সেহরিতে স্বাভাবিক খাবার দেয়া হয় তাকে।

হাসপাতালের উপপরিচালক মোখলেসুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গোলাম আযমের বড় কোনো রোগ নেই।”

দেড় বছর আগে হাসপাতালে আসার সময় যেমন ছিলেন, জামায়াত নেতা এখনো তেমন রয়েছেন বলে জানান তিনি।

উপপরিচালক বলেন, “তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। বয়সজনিত সমস্যার চিকিৎসাই তাকে দেয়া হচ্ছে।”

গোলাম আযমের কী রোগ- জানতে চাইলে তার চিকিৎসা ব্যবস্থার সমন্বয়কারী অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তার বড় কোনো রোগ নেই, শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে।”

তিনি জানান, জামায়াত নেতাকে নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপ ও বাতের ওষুধ খেতে হয়। তার দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তিও ক্ষয়িষ্ণু।

গোলাম আযমকে হাসপাতালে রাখার কি প্রয়োজন রয়েছে- জানতে চাইলে অধ্যাপক আবদুল্লাহ বলেন, “এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার আমার একার নয়। মেডিকেল বোর্ড রয়েছে।”

আর এই বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক মো. আশরাফুল ইসলাম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গোলাম আযমের বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শই কঠোরভাবে মেনে চলা হচ্ছে।

হাসপাতালে তাকে রাখাসহ সব সিদ্ধান্ত চিকিৎসকের পরামর্শ মেনেই হচ্ছে বলে জানান তিনি।