মুজাহিদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
গোলাম মুজতবা ধ্রুব
Published: 16 Jul 2013 03:59 PM BdST Updated: 16 Jul 2013 03:59 PM BdST
বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, দেশান্তরে বাধ্য করাসহ সাতটি অভিযোগে অভিযুক্ত আলী আহসান মো. মুজাহিদের মামলায় রায় দিতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
Related Stories
গত ৫ জুন ট্রাইব্যুনাল-২ এ এই মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এরপর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়।
জামায়াতের বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ একাত্তরে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তখন আল বদর বাহিনীর শীর্ষ নেতা হিসেবে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এসেছে তার বিরুদ্ধে।
একক ও দলবদ্ধভাবে
সরাসরি জড়িত থেকে কিংবা নেতৃত্ব দিয়ে, পাকিস্তানিদের সহযোগিতা ও নির্দেশ দেয়ার
মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছেন বলে মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা
হয়েছে।
অভিযোগ-১: পাকিস্তানের বাঙালি সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি দৈনিকে প্রবন্ধ লেখার অপরাধে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ৫ নম্বর চামেলীবাগের ভাড়া করা বাসা থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয় ইত্তেফাকের সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে। এর পর তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় ইন্ধন, অপরাধীদের সুযোগ সৃষ্টি করে অপরাধ সংঘটনে ভূমিকা রাখার অভিযোগ আনা
হয়েছে মুজাহিদের বিরুদ্ধে, যা আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ৩
(২) (এ) (জি), ৪ (১), ৪ (২) এবং ২০ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অভিযোগ-২: একাত্তরের মে মাসের মাঝামাঝি
সময়ে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন থানায় বৈদ্যডাঙ্গি, মাঝিডাঙ্গি ও বালাডাঙ্গি গ্রামে
হিন্দুদের প্রায় সাড়ে তিনশ’ বাড়ি পুড়িয়ে দেয় পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসররা। হামলাকারীদের
গুলিতে ৫০ থেকে ৬০ জন নরনারী নিহত হন। ওই ঘটনায় ফরিদপুর শহরের হামিদ মাওলানা ছাড়াও
৮/১০ জন অবাঙালি অংশ নেন।
এ ঘটনায় বিশেষ ধর্মে
বিশ্বাসী মানুষের ওপর হামলায় সহযোগিতা করা ও হামলায় ইন্ধন দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে
মুজাহিদের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন ১৯৭৩-এর ৩ (২) (এ)
(সি)(জি) এবং ৪ (১) ধারায় এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অভিযোগ-৩: একাত্তরের জুন মাসের প্রথম
সপ্তাহে ফরিদপুর শহরের খাবাসপুর মসজিদের সামনে থেকে রাজাকাররা ফরিদপুর জেলার
কোতোয়ালি থানার গোয়ালচামট (রথখোলার) এলাকার মৃত রমেশ চন্দ্র নাথের ছেলে রণজিৎ
নাথ ওরফে বাবু নাথকে আটক করে। বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুর পুরনো সার্কিট হাউসে মুজাহিদের
উপস্থিতিতে পাকিস্তানি সেনা অফিসার মেজর আকরাম কোরাইশীর কাছে তাকে হস্তান্তর করা
হয়। সেখানে নির্যাতনের পর মুজাহিদের নির্দেশে তাকে হত্যা করার উদ্দেশে বিহারি
ক্যাম্পের উত্তর পাশে আব্দুর রশিদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে ঘরের জানালার
শিক ভেঙে রাতে রণজিৎ নাথ বাবু পালিয়ে জীবন বাঁচান।
এ ঘটনায় মুজাহিদের
বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৭৩ এর ৩ (২)(এ) (জি) ধারায় অপরাধ সংঘটনের
অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগ-৪: একাত্তরের
২৬ জুলাই সকালে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থেকে স্থানীয় রাজাকাররা মো. আবু ইউসুফ
ওরফে পাখিকে মুক্তিযোদ্ধা সন্দেহে আটক করে। পরে তাকে ফরিদপুর স্টেডিয়ামে আর্মি
ক্যাম্পে নিয়ে আটক রাখা হয়। সেখানে মুজাহিদের কাছ থেকে পাখির বিষয়ে জানতে পেরে
তার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় পাকসেনারা। প্রায় এক মাস ৩ দিন তাকে সেখানে
নির্যাতন করা হয়। এতে পাখির বুক ও পিঠের হাড় ভেঙে যায়।
এ ঘটনায় ১৯৭৩ এর ৩(২)(এ)
(জি) ধারায় অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে মুজাহিদের বিরুদ্ধে, যা ২০(২) ধারায়
শাস্তিযোগ্য।
অভিযোগ-৫: যুদ্ধ চলাকালে সুরকার আলতাফ মাহমুদ, জহিরউদ্দিন জালাল, বদি, রুমি, জুয়েল ও আজাদকে আটক করে ঢাকার নাখালপাড়ায় পুরনো এমপি হোস্টেলে রাখা হয়। ৩০ অগাস্ট রাত ৮টার দিকে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সেক্রেটারি মুজাহিদ ও সভাপতি মতিউর রহমান নিজামী সেখানে গিয়ে এক সেনা কর্মকর্তাকে পরামর্শ দেন, রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আগেই তাদের হত্যা করতে হবে। এ সিদ্ধান্তের পর সহযোগীদের নিয়ে মুজাহিদ আর্মি ক্যাম্পে আটকদের অমানসিক নির্যাতনের পর জালাল ছাড়া বাকিদের হত্যা করে।

অভিযোগ-৬: একাত্তরে ঢাকার মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাম্প তৈরি করে। পরবর্তীতে রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠনের পর সদস্যরা সেখানে প্রশিক্ষণ নিতেন। পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সেক্রেটারি হওয়ার সুবাদে ওই আর্মি ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ছিল মুজাহিদের। সেখানে নিয়মিত ঊর্ধ্বতন সেনা অফিসারের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী নানা অপরাধের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র করতেন তিনি। এ ধরনের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ১০ ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী নিধনসহ গণহত্যার মতো ঘটনা সংঘটিত হয়।
অভিযোগ-৭: একাত্তরের ১৩ মে মুজাহিদের নির্দেশে রাজাকার বাহিনী ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার বকচর গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়ে বীরেন্দ্র সাহা, নৃপেন সাহা, শানু সাহা, জগবন্ধু মিত্র, জলাধর মিত্র, সত্য রঞ্জন দাশ, নরদবন্ধু মিত্র, প্রফুল্ল মিত্র, উপেন সাহাকে আটক করে। পরে উপেন সাহার স্ত্রী রাজাকারদের স্বর্ণ ও টাকার বিনিময়ে স্বামীর মুক্তি চাইলেও মুজাহিদের নির্দেশে রাজাকাররা সবাইকেই হত্যা করে। একই সময়ে রাজাকাররা সুনীল কুমার সাহার কন্যা ঝর্ণা রানীকে ধর্ষণ করে। হিন্দুদের বসতঘরে লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া অনিল সাহা নামে একজনকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়।
এসব অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসের ৩(২)(এ)(জি) ধারায় মুজাহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়, যা ৪(১) এবং ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য।
-
গরুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় পুলিশ সদস্য নিহত
-
ফের যুক্তরাষ্ট্র থেকে অফিস করতে চান ওয়াসার এমডি
-
৫ অভিযোগ: খিলগাঁও আইডিয়ালকে বোর্ডের নোটিস
-
মহাসড়কে বাইক ঠেকাতে বিআরটিএ এর ম্যাজিস্ট্রেট চায় পুলিশ
-
নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিশ্বকে শাস্তি, এটাতো মানবাধিকার লঙ্ঘন: প্রধানমন্ত্রী
-
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বেলজিয়ামে নিযুক্ত দূতের সাক্ষাৎ
-
কোরবানির পশুবাহী গাড়ি কারণ ছাড়া আটকাবেন না: আইজিপি
-
হোমিও থেকে হেনোলাক্সের ব্যবসাতেই কোটিপতি নুরুল আমিন
-
গরুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় পুলিশ সদস্য নিহত
-
ফের যুক্তরাষ্ট্র থেকে অফিস করতে চান ওয়াসার এমডি
-
৫ অভিযোগ: খিলগাঁও আইডিয়ালকে বোর্ডের নোটিস
-
মহাসড়কে বাইক ঠেকাতে বিআরটিএ এর ম্যাজিস্ট্রেট চায় পুলিশ
-
নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিশ্বকে শাস্তি, এটাতো মানবাধিকার লঙ্ঘন: প্রধানমন্ত্রী
-
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে এলএসডিতে আসক্তি, পরে ‘মাদক কারবারি’
সর্বাধিক পঠিত
- শাস্তি পেল বাংলাদেশ দল
- শ্রীলঙ্কা ‘দেউলিয়া’ হয়ে গেছে: রনিল বিক্রমাসিংহে
- বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখাটাই কষ্টকর হয়ে গেছে: প্রধানমন্ত্রী
- হোমিও থেকে হেনোলাক্সের ব্যবসাতেই কোটিপতি নুরুল আমিন
- অনেক রদবদলের ওয়ানডে দলে অধিনায়ক ধাওয়ান
- ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপে ইন্দোনেশিয়া
- দেম্বেলে আর আমাদের খেলোয়াড় নয়: লাপোর্তা
- ‘নেইমারকে দলে চাইবে না কোন কোচ?’
- এবার লঞ্চে মোটরবাইক তোলা নিষিদ্ধ
- ধর্ম শিক্ষা ছিল, আছে, থাকবে: দীপু মনি