কোটা বাতিলের দাবিতে রাবি-শাবি-জাবিতে সড়ক অবরোধ

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছে রাজশাহী এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে একদল শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2013, 01:38 AM
Updated : 11 July 2013, 02:39 AM

একই দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একঘণ্টার  সড়ক অবরোধের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর তা তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা।

সকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে।

তারা ‘কোটা প্রথা বাতিল করো নইলো মোদের গুলি কর’, ‘আর নয় প্রহসন কোটা প্রথার হবে মরণ, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোটা মুক্ত ভাবনা’, এসমস্ত স্লোগান দিচ্ছিল তারা।

কোটা প্রথা বাতিল না হলে শনিবার সব বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে ফের সড়ক অবরোধের হুমকি দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

শিক্ষার্থীদের অবরোধের মুখে কয়েক’শ যানবাহন দু’পাশে আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়।

আধা ঘণ্টা অবরোধের পর সাড়ে ১১টার দিকে বিনোদপুর বাজার ঘুরে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফরহাদ হোসেন, নাসির, রাসেল রানা, আব্দুস সালাম, মাহফুজ, মাসুদসহ প্রমূখ।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন পদার্থ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব ও প্রক্টর তারিকুল হাসান মিলন।

অধ্যাপক সালেহ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটার নাম বলে দেশের স্বাধীনতার আসল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করা হচ্ছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা কখনো প্রতিদানের আসায় এই দেশকে স্বাধীন করেননি।

পরে সাড়ে ১২টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যায়।

একই দাবিতে দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল শিক্ষার্থী।

তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে উভয় দিকে অনেক যানবাহন আটকা পড়ে। দেড়টার দিকে তারা অবরোধ তুলে নিয়ে শুক্রবার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থানের ঘোষণা দেয়।

এদিকে সকাল ১১টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।

ঘন্টাখানেক পর প্রক্টর মো. মজিবুর রহমানের অনুরোধে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করে।

অবরোধের সময় সাভার ও নবীনগর এলাকার ব্যস্ত এই মহাসড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অবরোধ কর্মসুচিতে অংশ নেওয়া ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সর্বক্ষেত্রে মেধার মূল্যায়নের দাবিতে আমাদের এই অবরোধ।”

নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুর রহমানকে অবরোধে অংশ নিতে দেখা গেছে। ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারাও এতে অংশ নেন।

৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে কোটার ভিত্তিতে ফল প্রকাশের পর বুধবার শাহবাগে দিনভর বিক্ষোভ করে একদল পরীক্ষার্থী। সারাদিন সড়ক অবরোধের বিকালে ৩৪তম বিসিএসের ফল পুনর্বিবেচনা করার ঘোষণা দেয়।

কিন্তু আন্দোলনকারীরা ওই ফলের সঙ্গে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবি তুলে কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়।

কোটার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোটা পদ্ধতি সংস্কারের কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।