‘কোটা নিয়ে কোনো নির্দেশনা ছিল না’

৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশে কোটার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন কোনো নির্দেশনা ছিল না বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2013, 04:23 AM
Updated : 10 July 2013, 05:05 AM

এনিয়ে পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুস সোবহান সিকদার বুধবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একথা জানান।

তিনি বলেন, “৩৪তম বিসিএসের প্রিলির ফল প্রকাশে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। পিএসসি সচিবের সঙ্গে সকালে আমার কথা হয়েছে তিনি বলেছেন, আগের নিয়মেই ফল দেয়া হয়েছে।”

এছাড়া সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি ‘সংস্কার’ সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আপাতত কোনো উদ্যোগ নেই।”

৩৪তম বিসিএসের দায়িত্বে থাকা পিএসসির সদস্য মুহম্মদ লিয়াকত আলী খান মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, “এবার প্রিলিমিনারি পর্যায় থেকেই যে কোটায় যতগুলো পদ আছে তার বিপরীতে প্রার্থী নেয়া হয়েছে।”

এই বিষয়টি জানালে আব্দুস সোবহান বলেন, “তারা তো সম্পূর্ণ স্বাধীন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে কোনো ডিরেকশন দেয়া হয়নি।”

সোমবার ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল দেয়ার পর মঙ্গলবার রাজধানীতে বিক্ষোভ করেন বাদপড়া একদল পরীক্ষার্থী। তারা বলছেন, প্রিলিমিনারিতে কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করায় মেধাবী অনেককে বাদ পড়তে হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে হাজার খানেক পরীক্ষার্থী কোটা পদ্ধতি ‘সংস্কার’ ও ৩৪তম বিসিএসের ফল ‘পুনর্মূল্যায়নের’ দাবিতে শাহবাগে সড়ক অবরোধ করে, এতে রাজধানীতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

মুখ খুলছে না পিএসসি

৩৪তম বিসিএসের ফল নিয়ে বুধবার সকাল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পক্ষ থেকে সরকারি কর্ম কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউই এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

কমিশনে গিয়েও কর্মকর্তাদের ‘অনুমতি’ না মেলায় পিএসসিতে ঢোকা যায়নি।

কমিশনের চেয়ারম্যান এটি আহমেদুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সকাল ৯টা থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়।

এক সময় তার ব্যক্তিগত সহকারী বলেন, “স্যার মিটিংয়ে আছেন।”

পরে আবার যোগাযোগ করা হলে চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে বলা হয়, “স্যার ভাইবা বোর্ডে গেছেন।”  

দুপুরে আবারো যোগাযোগ করা হলে কর্মকর্তারা বলেন, “এ বিষয়ে স্যার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন।”

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আ ই ম নেছার উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তাকে উদ্ধৃত করে বলেন, “১১টার পর ফোন দিতে বলবেন। আমি কথা বলব।”

কিন্তু ১১টার পর থেকে নেছারের মোবাইল ও টিঅ্যান্ডটি নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও কেউ তা ধরেননি।

পরে পিএসসির সচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার দপ্তর থেকে বলা হয়, “এ বিষয়ে কমিশনের যুগ্ম-সচিব মো. ইউসুফ আলীর সঙ্গে কথা বলেন।”

ইউসুফ আলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার মাধ্যমে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ বিষয়ে কথা বলার আমি কেউ না। আমি শুধু প্রশাসনিক দিকগুলো দেখি।”

৩৪তম বিসিএসের দায়িত্বে থাকা পিএসসির সদস্য মুহম্মদ লিয়াকত আলী খানের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

পরে দুপুরে পুরাতন বিমানবন্দরে কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যান অথবা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে অভ্যর্ত্থনা কক্ষ থেকে বলা হয়, “ভেতরে যেতে কারো না কারো অনুমতি লাগবে। আমরা অনুমতি ছাড়া কাউকেই যেতে দেব না।”

পিএসসির কোনো কর্মকর্তার অনুমতি না মেলায় কমিশনের ভেতরে যাওয়াও সম্ভব হয়নি।

অবশ্য বছরের অন্য সময়ও পিএসসিতে সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে পারেন না। এ নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভও রয়েছে।

পিএসসির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাঁচ দফা সভা করে ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল কিভাবে দেয়া হবে তা ঠিক করা হয়েছে।

এর আগে সব সময় এক মাসের মধ্যে প্রিলিমিনারির ফল দেয়া হলেও এবার দেড় মাস পর গত সোমবার তা দিয়েছে পিএসসি। এতে ১২ হাজার ৩৩ জন উত্তীর্ণ হন।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে এবার প্রিলিমিনারিতে ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭৫ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। সেই হিসাবে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণের হার ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ।