‘৮৯টি সঠিক উত্তর দিয়েও চান্স পাইনি’

৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে কোটার ভিত্তিতে ফল প্রকাশ করায় বেশি নম্বর পেয়েও অনুত্তীর্ণ হয়েছেন অভিযোগ করে অনেক পরীক্ষার্থী এই ফল বাতিলের দাবি তুলেছেন।

শহীদুল ইসলামবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2013, 00:19 AM
Updated : 11 July 2013, 00:24 AM

আগে লিখিত পরীক্ষার পর কোটার ভিত্তিতে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হলেও এবার প্রাথমিক বাছাইয়েই কোটার ভিত্তিতে ফল দেয়া হয়েছে।

এর ফলে বেশি নম্বর পেয়েও অনেকে শুরুতেই বাদ পড়েছে বলে স্বীকার করেছেন সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) একাধিক কর্মকর্তা।

তবে এই বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি পিএসসির শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা।

বুধবার সকালে শাহবাগে একদল পরীক্ষার্থীর বিক্ষোভের মধ্যে পিএসসি চেয়ারম্যান এটি আহমেদুল হক চৌধুরী, সচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আ ই ম নেছার উদ্দিন ও যুগ্ম-সচিব মো. ইউসুফ আলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সাংবাদিক শুনেই তারা তা কেটে দিয়েছেন।

পিএসসির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রথমবারের মতো কোটার ভিত্তিতে প্রিলিমিনারির ফল দেয়া হয়েছে। ফলে মেধাবী অনেকেই বাদ পড়েছেন।”

তিনি জানান, এই প্রিলিমিনারির ফল কিভাবে দেয়া হবে, পাঁচ দফা সভা করে সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এক মাসের মধ্যে প্রিলিমিনারির ফল দেয়ার কথা থাকলেও এবার দেড় মাস পর গত সোমবার তা দিয়েছে পিএসসি। এতে ১২ হাজার ৩৩ জন উত্তীর্ণ হন।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে এবার প্রিলিমিনারিতে ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭৫ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। সেই হিসাবে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণের হার ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

এর আগে ৩৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে ১৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ৩২তম বিশেষ বিসিএসে ৪৪ শতাংশ এবং ৩১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ প্রার্থী উত্তীর্ণ হন।

সেই হিসাবে এবারের অর্থাৎ ৩৪তম বিসিএসেই সবচেয়ে কম প্রার্থী প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

এবার প্রিলিমিনারিতে ১০০টির মধ্যে ৯৩টি প্রশ্নের ঠিক উত্তর দেয়ার দাবি করে মাহাতাব নামে একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি উত্তীর্ণ না হলেও ৬৪ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তারই এক বন্ধু।

শুভ, আরিফ ও জাকিয়া নামের তিন প্রার্থীও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নব্বইয়ের বেশি প্রশ্নের ঠিক উত্তর দিয়েও বাদ পড়েছেন তারা।

বুধবারের অবরোধের ছবি

৩১ ও ৩৩তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিলেও ৩৪তম বিসিএসের প্রিলিমিনারিতে ঠাঁই পাননি নূর।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একশ’র মধ্যে ৮৯ পেয়েও প্রিলিতে চান্স পাইনি। ঠিকমতো রেজাল্ট দেয়া হয়নি বলেই মনে হচ্ছে।”

৩১তম বিসিএসে চাকরি পেলেও পছন্দের ক্যাডার পেতে ৩৪তমের প্রিলিমিনারিতে অংশ নেন সমীর, তবে উত্তীর্ণ হতে পারেননি।

তিনি ক্ষোভের সঙ্গেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই বিসিএসে অংশ নেয়া আমার অন্য বন্ধুরাও বলছে এবারের ফল প্রকাশে কোনো একটা ঝামেলা হয়েছে। আমারও তাই মনে হচ্ছে। আমরা এর একটা বিহিত চাই।”

প্রিলিমিনারির নম্বর কখনোই প্রকাশ করে না পিএসসি এবং এই নম্বর নিয়ে চাকরি প্রার্থীরা চ্যালেঞ্জও করতে পারেন না।

৩৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল পরীক্ষা নেয়ার ২১ দিন পর দেয়া হলেও এবার তা দেয়া হয়েছে ৪৫ দিনের মাথায়।

পিএসসির ওই কর্মকর্তা বলেন, “প্রিলির ফল প্রকাশ নিয়ে পিএসসি কর্মকর্তারা চার দফা সভা করেন। এতেও কিভাবে ফল দেয়া হবে তা ঠিক না হওয়ায় গত ৩ জুলাই সর্বশেষ সভায় ‘বিশেষভাবে’ প্রিলিমিনারির ফল দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।”