দুই বছর আগে রাজধানীর মিরপুরের একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত দুই বোন রিতা-মিতাকে বগুড়ার একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
Published : 23 Jun 2013, 03:16 PM
বগুড়ার আকবরিয়া হোটেল থেকে রোববার দুপুরে চিকিৎসক আইনুন্নাহার রিতা (৪৯) এবং প্রকৌশলী নুরুন্নাহার মিতাকে (৪৫) উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে তাদেরকে জেলার সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পূর্ণবাসন কেন্দ্র্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
২০১১ সালে রিতা ও মিতাকে তাদের মিরপুরের বাসা থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে তারা বাড়ি ফেরেন।
সে সময় কিছুদিন বড়বোন কামরুননাহার হেনার সঙ্গে থাকলেও পরে তারা আলাদা বাসায় থাকতে শুরু করেন।
এর আগে ২০০৭ সালেও একই কারণে তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে আবার তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আকবরিয়া আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক দিপু বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রিতা ও মিতা তাদের হোটেলে ওঠেন। সপ্তাহখানেক আগে থেকে তারা হোটেল ভাড়া এবং পাঁচ দিন ধরে বাইরে থেকে খাবার আনাও বন্ধ করে দেন তারা।
সন্দেহ হওয়ায় এ ঘটনা পুলিশকে জানালে তারা মানবাধিকার সমিতির সিনিয়র সদস্য এ্যাড. শাহজাদি লায়লাকে নিয়ে দুইবোনকে উদ্ধার করে।
তারা পুলিশ ও মানবাধিকার কর্মীদের কাছে ভিন্ন নাম বললেও হোটেল রেজিস্টারে তাদের নাম নুরুন্নাহার ও আইনুন্নাহার লিখেছিল, বলেন ব্যবস্থাপক দীপু।
মানবাধিকার কর্মী এ্যাড. শাহজাদি লায়লা বলেন, প্রথমে তারা দরজা খুলতে চায়নি এবং নিজেদের ভিন্ন নাম বলেছে। এক পর্যায়ে দরজা খোলেন এবং হোটেল কক্ষে তাদের সঙ্গে কথা হয়।
এ সময় মিতা বলেন, আমরা রিতা মিতা নই। ওটা আল্লাহর দেয়া নাম না। আমরা কানাডার বাসিন্দা। ঢাকার মিরপুরের বাসা আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করেছি।”
শাহজাদি লায়লা জানান, এ সময় তারা অনেক ‘অসংলগ্ন’ কথাও বলেন।
বগুড়া সদর থানার ওসি সৈয়দ শহীদ আলম দুবোনকে উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, সিজোফ্রেনিয়া একটি মারাত্মক মানসিক সমস্যা যেখানে মানুষ বাস্তবতা থেকে দূরে সরে যায় এবং অবাস্তব অনেক কিছুকে বাস্তব হিসাবে বিশ্বাস করে।
এই সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি এবং ধারাবাহিক চিকিৎসায় কমলেও তা বারবার ফিরে আসতে পারে।