ওই তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত যে ব্যাংকের তালিকা সোমবার তিনি সংসদে দিয়েছেন, তাতে ইসলামী ব্যাংকের নাম নেই।
সংসদ সদস্য সাধনা হালদারের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী ২৪ কোটি ৫০ লাখ ৯০ হাজার ৫৫০ টাকা ক্ষতির খতিয়ান তুলে ধরেন।
১৩ দফা দাবিতে গত ৫ মে ঢাকা অবরোধের পর বিকালে মতিঝিলে শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয় হেফাজতকর্মীরা। ভোররাতে তাদের সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে তুলে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তবে তুলে দেয়ার আগে ৫ মে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মতিঝিল থেকে পল্টন পর্যন্ত এলাকায় চলে হেফাজতকর্মীদের তাণ্ডব। বহু প্রতিষ্ঠান, দোকান, গাড়ি পুড়িয়ে দেয় তারা, কেটে ফেলে সড়ক দ্বীপের গাছগুলো, উপড়ে ফেলে সড়ক বিভাজক।
ক্ষতিগ্রস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো হচ্ছে- জনতা ব্যাংক ৫ কোটি ১০ লাখ টাকা, সোনালী ব্যাংক ৩ লাখ ৪৩ হাজার ২৫০ টাকা, অগ্রণী ব্যাংক ৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, রূপালী ব্যাংক ৮ লাখ টাকা, কৃষি ব্যাংক ২ লাখ টাকা, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ৪৪ হাজার ৪২৫ টাকা, উত্তরা ব্যাংক ৩০ লাখ টাকা, এবি ব্যাংক ৬০ হাজার ৪৫০ টাকা, আইএফআইসি ব্যাংক ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, দি সিটি ব্যাংক ৫৭ হাজার টাকা, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ২ লাখ ৩ হাজার ৮০৯ টাকা, ইষ্টার্ন ব্যাংক ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৪৯০ হাজার টাকা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ৪০ হাজার টাকা, প্রাইম ব্যাংক ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, প্রিমিয়ার ব্যাংক ১৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, ব্যাংক এশিয়া ৩৩ লাখ ৯০ হাজার ১২৬ কোটি টাকা, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ক্ষতি ১০ হাজার টাকা।
এছাড়া হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের ১৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা, বেসিক ব্যাংকের ৫০ হাজার টাকা, জীবন বীমা কর্পোরেশনের ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।
সাধনা হালদারেরই এক প্রশ্নে গত ৯ জুন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংসদে জানান, হেফাজতের তাণ্ডবের ক্ষয়ক্ষতি মেরামতে ৩ কোটি ৩৩ লাখ সাত হাজার বরাদ্দ করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, বিজয় নগর, পল্টন, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ছোট, বড় ও মাঝারি ১ হাজার ২৫৫টি গাছ কাটা হয়েছিলো সেদিন।
এছাড়া ৩ হাজার মিটার ফুটপাত, ২ হাজার ৮০০ মিটার কার্বস্টোন, ১ হাজার ৫৫ বর্গমিটার গ্রিল, ২ হাজার ৪৩৯ বর্গমিটার কাঁটাতারের বেড়া, ৩ হাজার ৫৪০ বর্গমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হেফাজতের ইসলামের মহাসচিব এবং জামায়াতে ইসলামীর অজ্ঞাত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা করেছে।
সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও জীবন বীমা কর্পোরেশন মতিঝিল থানায় করেছে বলেও জানান মুহিত।
বিরোধী দলের সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তারের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলি হতে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে ২ লাখ ৩ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এবং ১ লাখ ২৯ হাজার ২৪০ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে।
অন্যদিকে ওয়েজ অ্যান্ড মিনস এবং ওভার ড্রাফট হিসাব খাত হতে সরকার মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ এবং ১ লাখ ২০ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে।
আওয়ামী লীগের সুকুমার রঞ্জন ঘোষের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, ২০১৩ সালের ৩১ মে পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ ৫৯ হাজার বৈধ টিআইএন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১১ লাখ ৬৪ হাজার জন আয়কর বিবরণী জমা দিয়েছেন।
বিএনপির জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, গত চার বছরে জাহাজ ভাঙা শিল্প থেকে সরকারের কোষাগারে মূল্য সংযোজন কর হিসেবে ২০৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং শুল্ক বাবদ ৭৪০ কোটি টাকা এবং উৎসে কর বাবদ ২১২ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।