কানাডা থেকে ‘শূন্য হাতে’ ফিরল দুদক দল

পদ্মা প্রকল্পের কাজ পেতে ঘুষের প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ ওঠা এসএনসি-লাভালিন কর্মকর্তা রমেশ শাহের ডায়েরি কানাডা গিয়েও সংগ্রহ করতে পারেনি দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত দল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2013, 10:24 AM
Updated : 2 June 2013, 10:33 AM
রমেশ ছাড়াও ওই কোম্পানির অপর দুই কর্মকর্তার জবানবন্দিও তারা পায়নি।

দুদকের প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক রোববার বিকেলে দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন। যদিও দুদক চেয়ার‌ম্যান গোলাম রহমানের দাবি, ‘সন্তোষজনক অগ্রগতি’ হয়েছে।

কানাডার আদালতে এসএনসি-লাভালিনের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ, কোম্পানির তিন কর্মকর্তা ও দুদকের মামলার আসামি কেভিন ওয়ালেস, রমেশ শাহ এবং মো. ইসমাইলের জবানবন্দি সংগ্রহ ও রমেশের ডায়েরি সংগ্রহ করতে ১৯ মে দুদকের প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক এবং দুদকের উপপরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম কানাডা যান।

২২ মে দুদকের মাসিক ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব ফয়জুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, কানাডা থেকে দুদক দল রমেশের ডায়েরি কিংবা ডায়েরির পাতা হলেও সংগ্রহ করবে।

মঙ্গলবার মির্জা জাহিদ এবং বৃহস্পতিবার আনিসুল হক দেশে ফেরেন।

রোববার দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, “ডায়রিটি এখন কানাডার আদালতের সম্পত্তি। আমরা সংগ্রহের আবেদন করেছিলাম, কিন্তু কানাডার আদালত জানিয়েছে বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ডায়েরি কিংবা এর কোনো কপি তারা আমাদের হস্তান্তর করতে পারবে না।”

রমেশ এবং ইসমাইলের জবানবন্দি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তাদের আইনজীবীদের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু রমেশের আইনজীবী আমাদের মেইলের উত্তর দেননি আর ইসমাইলের আইনজীবী জানিয়েছেন- তার মক্কেল আমাদের সাথে কথা বলতে আগ্রহী নয়।”

পদ্মাসেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়ার কথা থাকলেও দুর্নীতি অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েনের পর গত জানুয়ারির শেষে বাংলাদেশ সরকার তাদের ‘না’ করে দেয়।

এই প্রকল্পের কাজ পেতে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের ঘুষ সাধার অভিযোগে এসএনসি-লাভালিনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল ও আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহের বিচার চলছে কানাডায়। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কানাডায় এসএনসি-লাভালিন কার্যালয় থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে সে দেশের পুলিশ।

আর কাকে কত হারে ঘুষ দিতে হবে সে তথ্য ছিল রমেশের ডায়েরিতে।

এরই মধ্যে পদ্মা প্রকল্পে পদ্মা প্রকল্পে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কানাডীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনকে ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বিশ্বব্যাংক।

কানাডা সফরের অর্জন প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, “কানাডার আইন অনুযায়ী একটি মামলা বিচার পর্যন্ত গড়াবে কি না তা সিদ্ধান্ত হয় কমিটাল প্রসিডিংস এর মাধ্যমে। আদালতে প্রাথমিক একটা আর্গুমেন্ট হয়, এর ভিত্তিতেই মামলার সিদ্ধান্ত হয়। আমরা কর্তৃপক্ষের (কানাডীয়ান রয়্যাল পুলিশ) সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক ভাবে মামলার বিচারকাজ শুরু হবে।”

সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে আবারো কানাডা যেতে হতে পারে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, “যে উদ্দেশ্যে তাদের পাঠানো হয়েছিল, সে বিষয়ে সন্তোষজনক অগ্রগতি হয়েছে। কিছু ইনফরমেশন তারা এনেছেন।”

অবশ্য এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।