উচ্চমাধ্যমিকে আগের পাঁচটি বিভাগের সঙ্গে নতুন বিভাগ হিসেবে যুক্ত হচ্ছে ‘ইসলাম শিক্ষা’। এছাড়া সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ নম্বরের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়কে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
Published : 21 May 2013, 02:46 PM
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সচিব ব্রজ গোপাল ভৌমিক এ তথ্য জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্ম শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়ার জন্যই চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ইসলাম শিক্ষা বিভাগ খোলা হয়েছে।
সচিব বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে যে কোনো একটি শাখায় ভর্তি হতে হবে। সব শাখার শিক্ষার্থীদের আবশ্যিক বিষয় হবে বাংলা, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
দেশের আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ২০১৫ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে অতিরিক্ত একশ’ নম্বরসহ এক হাজার ৩০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নেবে।
বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের এক হাজার ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, সব বিষয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র থাকলেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে শুধু একটি পত্রই থাকছে। সব বিষয়ে সপ্তাহে পাঁচটি ক্লাসের কথা বলা হলেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে সপ্তাহে ক্লাস হবে তিনটি। প্রতি ক্লাসের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে এক ঘণ্টা।
এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক তাহেরা আক্তার জাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীদেরও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয় পড়তে হবে।
আর নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিভাগভিত্তিক আবশ্যিক বিষয় হিসাবে পড়তে হবে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, উচ্চতর গণিত অথবা জীববিজ্ঞান।
এছাড়া ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গণিত, কৃষিশিক্ষা, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, মৃত্তিকা বিজ্ঞান, প্রকৌশল অঙ্কন ও ওয়ার্কশপ প্র্যাকটিস এবং ক্রীড়া বিষয়ের যে কোনো একটি বিষয় পড়বে।
মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগভিত্তিক আবশ্যিক বিষয় হিসেবে ইতিহাস অথবা ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের মধ্যে থেকে একটি; পৌরনীতি, সুশাসন অর্থনীতি ও যুক্তিবিদ্যা বিষয়ের মধ্যে থেকে একটি এবং সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম ও ভূগোল বিষয়ের মধ্যে থেকে যে কোনো একটি করে মোট তিনটি বিষয় পড়তে পারবে।
এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে পৌরনীতি ও সুশাসন, অর্থনীতি,ভূগোল, যুক্তিবিদ্যা, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, ইসলাম শিক্ষা, মনোবিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, নৃ-বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, চারু ও কারুকলা, নাট্যকলা, সমরবিদ্যা, আরবি বা পালি বা সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া বিষয়ের মধ্য থেকে যে কোনো একটি বিষয় পড়তে পারবে।
এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভাগভিত্তিক আবশ্যিক বিষয় হিসাবে ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান ও ফিন্যান্স ব্যাংকিং এবং বীমা অথবা উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন এই তিনটি বিষয় পড়বে।
এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে রাখা হয়েছে- ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিমা, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি, মানবসম্পদ, পরিসংখ্যান, ভূগোল, অর্থনীতি, কৃষিশিক্ষা, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, সাচিবিকবিদ্যা ও অফিস ব্যবস্থাপনা।
তবে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য সাচিবিক বিদ্যা ও অফিস ব্যবস্থাপনা বিষয়টি ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের পর আর থাকবে না বলে জানান এনসিটিবির কর্মকর্তারা।
ইসলাম শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিভাগভিত্তিক আবশ্যিক বিষয় হিসাবে ইসলাম শিক্ষা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং আরবি বিষয় পড়ানো হবে।
অন্যদিকে সমাজবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, কৃষিশিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, যুক্তিবিদ্যা, ভূগোল ও অর্থনীতি বিষয়ের মধ্যে থেকে যে কোনো একটি ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে পড়তে পারবে এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও সংগীত শাখার পাঠ্যক্রম অপরিবর্তিত থাকবে।
দেশের সব সরকারি-বেসরকারি কলেজে আগামী ১৮ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্ক্রম শুরু হয়েছে, যার ক্লাস আগামী ১ জুলাই শুরু হবে।
এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৪১৭ জন অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৯১ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।