সাভারে ভবন ধসে বহু হতাহতের মামলার আসামি সোহেল রানার পক্ষে না লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকার আদালতের আইনজীবীরা।
Published : 29 Apr 2013, 06:00 PM
ভবন মালিক রানাকে সোমবার ঢাকার আদালতে হাজির করা হলে তার পক্ষে ওই আদালতের কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি।
তার পক্ষ হয়ে ব্যারিস্টার শেখ আবু মুসা মুহাম্মদ আরিফ নামের একজন আইনজীবী কথা বলার চেষ্টা করলে এজলাসে উপস্থিত সব আইনজীবী তাকে থামিয়ে দেন।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানিয়ে সোহেল রানাকে আদালতে তোলে পুলিশ। শুনানি শেষে তাকে ১৫ দিনের রিমান্ডে পাঠান হাকিম ওয়াসিম শেখ।
আদেশের পর ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ মিয়া আলম সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকা বারের কোনো আইনজীবী এই আসামির পক্ষে লড়বে না।
গত ২৩ এপ্রিল ভবনে ফাটল দেখা দেয়ার পরও রানা প্লাজার পাঁচটি কারখানায় কাজ চলা অবস্থায় পরদিন ধসে পড়ে ভবনটি।
ইমারত নির্মাণ আইন না মেনে নয় তলা ওই ভবন নির্মিত হয়েছিল বলে অভিযোগ এনে ধসের পর মামলা হয়েছে।
ভবন ধসের পর পালিয়ে থাকা রানাকে রোববার বেনাপোল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।তিনি নিজেকে যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।
বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে রানাকে আদালতে তোলা হয়। কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় নানা ভঙ্গিমায় টলতে দেখা যায় রানাকে।
ওই সময় কাঠগড়ার কাছে দাঁড়ানো আদালতের কর্মচারীরা রানাকে তাকে ভৎর্সনা করেন। কোনো কোনো আইনজীবী বলেন, ভণ্ডামী করছেন এই আসামি।
কাঠগড়ায় রানা এক পর্যায়ে পানি খেতে চাইলে এক আইনজীবী পানি দিতে এগিয়ে যান। তখন অন্য সবাই হৈ চৈ শুরু করেন। ওই আইনজীবীকে ‘দালাল’ বলে চিৎকার শুরু করেন তারা।
আদালতে যখন শুনানি চলছিল, তখন রানার ফাঁসির দাবিতে বাইরে স্লোগান দিচ্ছিল কয়েকশ মানুষ। ধসে নিহতদের কথা স্মরণ করে অনেককে কাঁদতেও দেখা যায়।
রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদনে ঢাকা জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খন্দকার আব্দুল মান্নান, আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন, আসামি রানা ও আনিস ওই ভবনে পোশাক শ্রমিকদের জোর করে সেদিন ঢুকিয়েছিলেন।
“কাদের মদদে রানা চলতেন এবং ওই ভবন যে কোনো সময় ভেঙে পড়বে জেনেও শ্রমিকদের ভেতরে ঢুকতে বাধ্য করেন তা জানতে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ জরুরি,” বলা হয় আবেদনে।
আদালতের কাছে আবেদন করেন মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহীন শাহ।
আদালত জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়ার সঙ্গে এটাকে চাঞ্চল্যকর মামলা অভিহিত করে তদন্ত কর্মকর্তাকে সতর্কতার সঙ্গে মনযোগ দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করতে বলেছে।