হলে ঢুকে বুয়েটে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে জখম

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক নেতাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে অজ্ঞাতপরিচয় এক ‘দুর্বৃত্ত’।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2013, 02:03 AM
Updated : 9 April 2013, 12:44 PM
আহত আরিফ রায়হান দীপ বুয়েটের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র (২০০৯ ব্যাচ) এবং ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

মঙ্গলবার সকালে বুয়েটের শহীদ নজরুল ইসলাম হলে তার ওপর হামলা হয়। এর পরপরই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।

পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মো. হারুনুর রশীদ হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, “শিবিরকর্মীরা এ হামলা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”

তবে দীপ এক দিন আগে হেফাজতের এক কর্মীকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার এক বন্ধু।

বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আমিনুল হক পলাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সকাল ১১টার দিকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি নজরুল ইসলাম হলের তৃতীয় তলায় উঠে ২২৪ নম্বর কক্ষে আরিফকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

হামলাকারী পালানোর সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা তার মুখে দাড়ি দেখেছে বলেও দাবি করেন আমিনুল।

তিনি বলেন, “আরিফের মাথা, কোমর ও চোখের আশপাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।”

হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক পীযুষ কান্তি মিত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, আরিফের মাথার বাম পাশে ক্ষত রয়েছে, চোখেও গুরুতর আঘাত লেগেছে। পিঠে দুটি কোপ রয়েছে। শরীরে মোট ৫০টি সেলাই দিতে হয়েছে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দীপকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।

পুলিশের উপ-কমিশনার হারুনুর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, হামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হলের দারোয়ান মো. জাকির হোসেনকে (৪০) লালবাগ থানায় নেয়া হয়েছে।

জাকিরের বরাত দিয়ে হারুন বলেন, আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী পাজামা-পাঞ্জাবি ও টুপি পরিহিত দাড়িওয়ালা এক ব্যক্তি এই হামলা করে পালিয়ে যায়।

পুলিশ ওই কক্ষ থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করেছে, যাতে একজোড়া পাজামা-পাঞ্জাবি ও একটি চাপাতি পাওয়া গেছে।

ব্যাগে ওই চাপাতি কেনার রশিদও পাওয়া গেছে। তাতে লেখা চাপাতিটি কেনা হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি। তবে সেখানে দোকানের নাম ছিল না।

২২৪ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের ভেতরে ও সিঁড়িতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ লেগে আছে।

আরিফের বন্ধু সিয়াম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গত পরশু হেফাজতের এক কর্মীকে পুলিশে ধরিয়ে দেয় আরিফ। এর প্রতিশোধ নিতেই হয়তো এ হামলা করা হয়েছে।

এদিকে আরিফকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক এসএম নজরুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীর কমিটির সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ।

আইসিইউ-য়ের সেবক-সেবিকারা জানান, আরিফ উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার সময় জানিয়েছেন, তিনি হামলাকারীদের চিনতে পেরেছেন।

দোষীদের খুঁজে বের করতে একটি তদন্ত কমিটি করা হবে বলে উপাচার্য সাংবাদিকদের জানান।