যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের পর দেশজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির।
Published : 28 Feb 2013, 05:39 PM
নাটোরে জামায়াতকর্মীরা পিটিয়ে মারল আ. লীগকর্মীকে
সিরাজগঞ্জে হরতালে সংঘর্ষে নিহত ২
এই সহিংসতায় সারাদেশে নিহত হয়েছে ৩৫ জন। এর মধ্যে পুলিশ রয়েছেন চারজন, দুজন সরকার সমর্থক সংগঠনের কর্মী।
চট্টগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বাকিদের প্রায় সবাইকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করেছে জামায়াত।
গাইবান্ধায় তিন পুলিশসহ ৬ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ৫ জন, রংপুরে ৫ জন, সাতক্ষীরায় ৪ জন, চট্টগ্রামে এক পুলিশসহ ৩ জন, সিরাজগঞ্জে ২ জন, নোয়াখালীতে ২ জন এবং ঢাকা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কক্সবাজার, দিনাজপুর, বগুড়া, মৌলভীবাজার, নাটোর ও রাজশাহীতে একজন করে নিহত হয়েছেন।
দেশব্যাপী সংঘাতে আহত হয়েছে দুই শতাধিক। জামায়াত-শিবিরকর্মীরা বহু গাড়ি ও দোকান পাট ভাংচুর করেছে। কয়েকটি স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ও মন্দিরেও হামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে।
এর পরপরই দেশের বিভিন্ন স্থানে মিছিল নিয়ে নামে জামায়াত এবং সেই মিছিল থেকে সহিংসতা ছড়ায়।
সহিংসতার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
গাইবান্ধা: সুন্দরগঞ্জে তিন পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।
দুপুরে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা রেল স্টেশনে হামলা চালায় এবং পরে বামনডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়।
নিহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- কনস্টেবল বাবলু মিয়া, নাজিম উদ্দিন ও হজরত আলী।
পুলিশ ফাঁড়িতে পিটিয়েই তাদের মারা হয় বলে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার এ কে এম নাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন।
বামনডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আবু হানিফ বলেন, স্টেশন এলাকায় গেলে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা পুলিশের ওপর গুলি চালালে পুলিশ সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গুলিতে তিনজন নিহত হয়। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
তখন জামায়াত-শিবিরকর্মীরা ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে পুলিশ সদস্যদের বেদম পেটায় বলে স্থানীয়রা জানায়।
ফাঁড়ির তিন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়া ছাড়াও পাঁচজন আহত হন।
সুন্দরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়, আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বাড়ি ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানেও আগুন দেয়া হয়।
সংঘাতের পর সুন্দরগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
উপজেলার বেলকা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ভাংচুর এবং উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের বাড়িতেও আগুন ধরানো হয়।
এদিকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীর মহেশপুর, সাদুল্লাপুরের গোসাইজানি ব্রিজ এলাকা এবং গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়কের অধিকাংশ এলাকায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা অবস্থান নিয়ে সড়কের গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ করে।
ঠাকুরগাঁও: সদর উপজেলার গড়েয়া বাজার এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার।
সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে এবং গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান তিনি।
নিহতরা হলেন- ফিরোজ (২৩), রবিউল ইসলাম বাদল (৩০), মনির (২১), মিঠুন (২০) ও সুমন (২৬)।
ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ বলেন, “জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা গুলি চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাঈদীর ফাঁসির রায়ের খবর প্রকাশের পর জামায়াত-শিবিরকর্মীরা গড়েয়া বাজারের ছয়টি দোকান ভাংচুর করে। এ সময় তারা আশপাশের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর চালায়।
বাধা দিলে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ওপর চড়াও হয় তারা। এ সময় জামায়াত-শিবির কর্মীদের ওপর গুলি চালানো হয়।
রংপুর: মিঠাপুকুরে পুলিশ-জামায়াত সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন কমপক্ষে ১০০ জন। তাদের মধ্যে ৫০ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুপুরের পর জামায়াতকর্মীরা মিছিল নিয়ে হামলা চালালে এই সংঘর্ষ বাঁধে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য সাহেদ আলী(৪৫), উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, শিবিরকর্মী সাদেকুর রহমান ও মাহমুদুল হাসান। তাদের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে।
উপজেলা জামায়াতের আমির গোলাম রব্বানী বলেন, নিহত যুবক মিঠাপুকুর উপজেরার ইমাদপুর এলাকার আশিকুর রহমান (২০)। তিনি স্থানীয় ছাত্র শিবিরের কর্মী।
জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল বি) সেলিম হায়দার জানান, বেলা ৩টার দিকে উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের দলীয় কার্যালয় থেকে জামায়াত-শিবির প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা পরিষদ চত্বরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। মূহুর্তের মধ্যে পুলো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।
এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলা চালায় সোনালী ব্যাংকে। এসময় আত্মরক্ষা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মিছিলকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু হেনা মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৭০ রাউন্ড গুলি চালাতে বাধ্য হয়। সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধ হন।
এদিকে বেলা ৩টায় পীরগাছা উপজেলার রেলস্টেশন এলাকায় বিএনপি-জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে হয় ৩ জন গুলিবিদ্ধ হওয়াসহ ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পীরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জুয়েল।
আহদের মধ্যে পীরগাছা থানার ওসিসহ ১২ জন পুলিশ ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা রয়েছেন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল মোজাহারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ শিবিরকর্মী সাইফুল, হানিফ ও বাবলুকে ভর্তি করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
সাতক্ষীরা: জামায়াত-শিবিরের হামলায় ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা এবং যুবলীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন।
অন্যদিকে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন শিবিরের দুই কর্মী।
বিকালে শহরের সার্কিট হাউস এলাকায় এই সংঘর্ষে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যসহ অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধ হন।
সংঘর্ষে শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার চৌধুরী।
পরে সদর থানার ওসি গাজী ইব্রাহিম চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা জয়দেব সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াত-শিবিরকর্মীরা বৃষ্টির মতো ইট ছুড়তে থাকলে পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।এক পর্যায়ে মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হলে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
ওই সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে তিনজন নিহত হন। তারা হলেন- সদর উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামের তুহিন ও সাইফুল এবং কদমতলা এলাকার শাহীন।
লাশ তিনটি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. জেড আহমেদ বলেছেন, তিনজন নিহত ছাড়াও গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তুহিন ও সাইফুল শিবিরকর্মী বলে জামায়াত নেতারা দাবি করেছেন।
অন্যদিকে শাহীনকে যুবলীগের কর্মী দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, শিবিরকর্মীদের হামলায় তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে পুলিশ ও বিজিবির হামলায় ছত্রভঙ্গ শিবিরকর্মীরা কদমতলা সংলগ্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়।
স্থানীয়রা জানায়, জামায়াত-শিবিরকর্মীরা কাশেমপুর গ্রামে শহরের সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল মামুনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মামুনকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে তার মৃত্যু হয়।
সংঘর্ষের সময় ওই এলাকায় বহু দোকানপাটও ভাংচুর হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সংঘাত থামলেও শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কোনো দোকান-পাট খোলা নেই। শহরে সড়কগুলোও ফাঁকা। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির টহল রয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে বিজিবি সদস্য ফরিদ, পুলিশ সদস্য রিয়াজুল ইসলাম হাসপাতালে রয়েছেন।
এছাড়া আব্দুল হামিদ, আব্দুল আহাদসহ কয়েকজনও রয়েছেন হাসপাতালে।
চট্টগ্রাম: দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের দফায় দফায় সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুজন মারা গেছে।
এছাড়া বাঁশখালীতে এক হিন্দু বৃদ্ধ নিহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
লোহাগাড়া থানার ওসি শাহজাহান জানান, দুপুর থেকে লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ও রাজঘাটা এলাকায় ছাত্রশিবির ও জামায়াতের কর্মীরা রাজাঘাটে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা লোহাগাড়ার রাজঘাটে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ সদস্যরা স্থানীয় গোল্ডেন সিটি কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় নিলে শিবিরকর্মীরা সেখানেও হামলা চালায়।
তিনি বলেন, আত্মরক্ষার্থে পুলিশ তাদের ওপর টিয়ার শেল এবং রাবার বুলেট ছুড়ে।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে মেজবাহ উদ্দিন (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়।
ওসি জানান, শিবিরকর্মীরা পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুনও দিয়েছে। হামলায় গুরুতর আহত পুলিশ কনস্টেবল মো. তারেক (২৩) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
চট্টগ্রাম সাউথ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. ইলতুৎমিশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লোহাগাড়ায় পুলিশের সঙ্গে হামলার ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত যুবক শিবির বা কোন দলের কর্মী কি না এবং কিভাবে মৃত্যু তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি। তবে তার বাড়ি লোহাগাড়ার রাজাঘাটা এলাকায়।
শাহজাহান জানান, লোহাগাড়ার আমিরাবাদে জামায়াত-শিবির কর্মীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক অবরোধ শুরু করে।
এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে শিবিরকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ বিপুল পরিমাণ টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে।
হামলায় চাম্বল গ্রামে দয়াল হরি শীল (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন বলে জানান ওসি আবদুস সবুর।
নিহতের বাড়ি বাঁশখালীর চাম্বল গ্রামে। তিনি বাঁশখালীর ধোপাপাড়া এলাকায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসার সময় হামলায় পড়েন।
বাঁশখালী সদরে অদূরে কয়েকটি মন্দিরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেলেও তা স্বীকার করেনি পুলিশ।
এদিকে বিকালে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউরী থেকে চট্টেশ্বরী সড়ক পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরকর্মীরা।
বিকাল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ওই এলাকায় গাড়ি, দোকানপাট, বিভিন্ন ব্যাংক ও বেসরকারি হাসপাতালে ভাংচুর চালানো হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।
শিবিরকর্মীদের হামলায় এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে নয় শিবিরকর্মীকে, এর মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ।
বিকাল ৫টার দিকে কোতোয়ালি থানার কাজীর দেউরী এলাকা থেকে ঝটিকা মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। তারা দ্রুত মিছিল করে চট্টেশ্বরী রোডের দিকে চলে যায়।
যাওয়ার পথে টেম্পো, অটো রিকশা, প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন যানবাহন, ১০ থেকে ১২টি দোকানে হামলা ও ভাংচুর চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই এলাকায় শিবিরকর্মীরা যানবাহন ভাংচুর করে ও তাতে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে শিবির কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এ এলাকা থেকে এ সময় ৯ জন শিবিরকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে তিনি জানান।
এর আগে দুপুরে শিবিরকর্মীরা নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় ও যানবাহন ভাংচুর করে। ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ২০ জনকে।
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে হরতাল চলাকালে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার চন্ডিদাসগাতিতে রাস্তায় কাঠের গুড়ি ফেলে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা চারিদিক থেকে পুলিশের ইপর ইপপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এ সময় র্যাব ও পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়লে প্রায় ২৫ জন আহত হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালের সিনিয়র সার্জন ডা. গোলাম রব্বানী তালুকদার হাসপাতালে দুই জন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা জামায়াতের আমীর আব্দুল লতিফ জানান, ২ শিবিরকর্মী নিহত ও ২৫ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রতিবাদে রোববার সিরাজগঞ্জ জেলায় অর্ধদিবস হরতাল ডাকা হয়েছে।
হরতাল সমর্থকদের ইটপাটকেলের আঘাতে র্যাবের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও আহতদের সদর হাসাপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার মো. আল-মামুন।
পুলিশ সুপার মো. আল-মামুন জানান, পুলিশের উপর হামলা ও নাশকতার অভিযোগে বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ মোট ১৩ জনকে আটক করেছে।
নোয়াখালী: বেগমগঞ্জে জামায়াত-শিবির কর্মীদের মন্দির ও হিন্দু বাড়িতে হামলায় এবং শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।
এই রায়ের পরপরই বেগমগঞ্জের রায়গঞ্জ বাজারে মিছিল বের করে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। ওই মিছিল থেকে রাজগঞ্জ বাজারের মন্দির, ঠাকুর বাড়ির সামনের মন্দির ও বাইন্নাবাড়ির মন্দির ভাংচুর হয় বলে বেগমগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মন্দির ভাংচুরের পর তারা ভূঁইয়া বাড়ি ও বণিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এই হামলায় নারীসহ ছয়জন আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশ ও জামায়াত-শিবিরকর্মীদের গোলাগুলিতে লিটন নামে এক পথচারী নিহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান সহকারী পুলিশ সুপার।
এদিকে দুপুর থেকে জেলা শহরের পৌর বাজার, গোদার মসজিদ ও দত্তের হাটে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে।
দত্তের হাটে গোলাগুলিতে খোকন (২০) নামে এক যুবক নিহত হন। তিনি ট্রাকচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে শিবির কর্মীরা দত্তেরহাটে আল-আমিন বাস ডিপোতে ১২টি বাস ভাঙচুর করে এবং চারটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
নোয়াখালীর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার (এসপি) মাহবুব রশীদ নোয়াখালীতে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হওয়ার কথা জানান।
দুই জায়গায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ তিনজনকে নোয়াখালীতে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মী সেলিম জানান।
তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে চার বছরের একটি শিশুও রয়েছে।
সংঘর্ষের সময় শিবিরকর্মীরা সাংবাদিকদের উপর হামলা করে। এতে এসএ টিভি ও মোহনা টিভির সাংবাদিক এবং বাংলা ভিশনের ক্যামেরাম্যান আহত হন।
বগুড়া: জামায়াত-শিবির কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ একজন নিহত হয়েছে।
শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গুলিতে ছাবেদ আলী (৪৫) মারা যায় বলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোরশেদ আলম জানিয়েছেন।
শাজাহানপুর থানার ওসি মাহমুদুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গুলি খেয়ে একজন মারা গেছে বলে শুনেছি।
বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম বলেন, সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর শহরের কলোনি এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। তাতে বাধা দিলে পুলিশের ওপর পাঁচ/ছয়টি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় পুলিশ কয়েক রাউণ্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরে একজন নিহত হয়েছেন। তার মুখ ঝলসানো ছিল বলে পুলিশের ধারণা, বোমা বিস্ফোরণ তার মৃত্যুর কারণ।
নিহতের নাম মোসলেম উদ্দিন (৭০)। বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ছয়নিগালা গ্রামে। পেশায় একজন কৃষক।
গত সোমবার তিনি ঢাকার মিরপুরের পাইকপাড়ায় মেয়ের বাসায় বেড়াতে আসেন। তার মেয়ে পলি আক্তার বলেন, সন্ধ্যায় চা খাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন মোসলেম।
মিরপুর ১ নম্বর থেকে মোসলেমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় এক পথচারী।
ঢামেক ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত ৮টার দিকে তুহিন নামের এক পথচারী একজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে ভ্যানের ওপর পড়ে থাকতে দেখে।
“পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।”
পলি রাতে মর্গে গিয়ে বাবার লাশ সনাক্ত করেন।
দিনাজপুর: রানীর বন্দরে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে।
রামডুবিতে সংঘর্ষে আহত হয়েছে এক সহকারী পুলিশ সুপারসহ সাতজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর রানীরবন্দরে নসরৎপুরে দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় জামায়াত শিবিরকর্মীরা। খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছোড়ে বিজিবি।
দিনাজপুর পুলিশ সুপার দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, দুপুর দেড়টায় দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের রামডুবিতে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে তারা পুলিশের উপর ১০/১২টি ককটেল ছুড়ে ও গুলি করে। এতে পুলিশের নায়েক শাহ আলম গুলিবিদ্ধ হন।
ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার। আহত হন আরও পাঁচ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ।
এছাড়া পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হাসিনুর (২০) নামে এক মাদ্রসা ছাত্র ও অজ্ঞাত পরিচয়ের একজনকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
নাটোর: লালপুরে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা পিটিয়ে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে হত্যা করেছে।
নিহত খায়রুল ইসলাম (৪০) উপজেলার কদিমচিলান গ্রামের দুলু ডাক্তারের ছেলে।
খায়রুল স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও লালপুরের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রায় প্রত্যাখ্যান করে দুপুরের পর কদিমচিলান গ্রামে মিছিল বের করে জামায়াত-শিবির। ওই মিছিল থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর আওয়ামী লীগ কর্মীর বাড়িতে হামলা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সাঈদীর রায় ঘোষণার পর পরই নাটোর-পাবনা মহাসড়কে কদিমচিলান এলাকায় শিবিরকর্মীরা টহল পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে হামলা চালায়। তারা পিকআপটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পিকআপ থেকে নেমে পুলিশ আত্মরক্ষার জন্য কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
এ সময় শিবিরকর্মীরা পুলিশ সদস্যদের লাঠিপেটা করে একটি শটগান ও একটি রাইফেল ছিনিয়ে নেয় বলে জানান ওয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রব।
এরপর শিবির কর্মীরা কদিমচিলান গ্রামের দুলু ডাক্তারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তার ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে জানান এসআই রব।
জামায়াতকর্মীদের হামলায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রব, সাইফুল ইসলাম ও আনিছুর রহমান, হাবিলদার আব্দুল মান্নান, কনস্টেবল সাইদুর রহমানসহ সাত জন আহত হন।
এদিকে সদর উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন জামায়াতের আমির জিল্লুর রহমান ও বড়াইগ্রামের বনপাড়া থেকে সাতজন শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
মৌলভীবাজার: বড়লেখায় জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ছয় পুলিশ সদস্যসহ আটজন।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানান, উপজেলার দাসের বাজার, দক্ষিনভাগ, তালিমপুর ও শাহবাজপুর বাজারে জামায়াত শিবিরকর্মীরা কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ এলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে এক জামায়াত কর্মী নিহত ও দুই গ্রামবাসী আহত হয়।
নিহত লোকমান আহমদ (২৫) উপজেলার দোহালিয়া গ্রামের আব্দুল মন্নানের ছেলে। পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত রথুলি গ্রামের নাইম (২২) ও রিপনকে (২০) জুড়ী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বড়লেখা থানার এসআই ওয়াকিল আহমদ জানান, সংঘর্ষের সময় ছয়জন পুলিশ সদস্য আহত হন। তারা স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে তিনি তাদের নাম জানাতে পারেননি।
বড়লেখা থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এসময় ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ফয়ছল আহমদ নিহত লোকমান তাদের কর্মী বলে দাবি করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শিবতলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ১ জন নিহত ও ২জন আহত হয়েছে।
নিহত নাসির উদ্দীন (২৩) শিবগঞ্জ উপজেলার গোপালনগর গ্রামের মফিজ উদ্দীনের ছেলে বলে জানান চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ওসি গোলাম মোর্ত্তুজা জানান।
আহতরা হলো- চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শামিম আখতার (২৩) ও শহরের শিবতলা মহল্লার আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুশ শুকুর(১৮)।
ওসি জানান, বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের শিবতলা এলাকায় জামায়াত-শিবির কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে। এসময় পুলিশ তারা ককটেল ও ইটপাটকেল ছুড়ে। এসময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে।
পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মশিউর রহমান নাসিরকে মৃত ঘোষণা করে।
অপর আহতরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার: পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে।
রায়ের পর জেলার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ১৩ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩৬ জন আহত হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সংঘর্ষে সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়ে গুলিবিদ্ধ মো. রশিদ (৩৫) সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন বলে সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন।
তিনি বোয়ালখালী এলাকার মো. ইলিয়াসের ছেলে।
রাজশাহী: বাঘা উপজেলায় গণপিটুনিতে এক শিবিরকর্মী নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত আমিরুল ইসলাম উপজেলার আহমদপুর গ্রামের জামায়াতকর্মী ওমর আলীর ছেলে।
বাঘা থানার ওসি হামিদুর রশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পর বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা সদরে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে স্থানীয় জনতার সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে জনতা আমিরুলকে ধরে ব্যাপক মারধর করে।
পুলিশ আমিরুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার মৃত্যু হয় বলে জানান ওসি।
তিনি বলেন, সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে।
এসমস্ত এলাকায় দোকানপাট, যানবাহনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। এসব এলাকায় পুলিশ-র্যাব-বিজিবিরসহ স্থানীয়দের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের ঘটনায় অর্ধশত পুলিশসহ প্রায় তিনশ মানুষ আহত হয়েছে।
এসব ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের অন্তত ২০০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।