দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর সাতক্ষীরায় বিক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবিরকর্মীদের হামলায় ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা ও যুবলীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন।
Published : 28 Feb 2013, 01:18 PM
অন্যদিকে পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন শিবিরের দুই কর্মী।
বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের সার্কিট হাউস এলাকায় এই সংঘর্ষে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যসহ অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধ হন।
সংঘর্ষে শুরুতে তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার চৌধুরী। পরে সদর থানার ওসি গাজী ইব্রাহিম চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রায়ের পর বিকাল ৪টার দিকে শহরের অদূরে কদমতলা থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে চাইলে পুলিশ ও বিজিবি সার্কিট হাউস এলাকায় তাদের বাধা দেয়। এতে সংঘর্ষ বাঁধে।
জামায়াত-শিবিরকর্মীরা বৃষ্টির মতো ইট ছুড়তে থাকলে পুলিশ প্রতমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এরপর হ্যান্ডমাইক দিয়ে বলতে থাকে, ‘আপনারা আর এগোলে আমরা গুলি ছুড়তে বাধ্য হব’।
পুলিশ কর্মকর্তা জয়দেব সাংবাদিকদের বলেন, “এক পর্যায়ে মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হলে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।”
ওই সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে তিনজন নিহত হন। তারা হলেন- সদর উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামের তুহিন ও সাইফুল এবং কদমতলা এলাকার শাহীন।
লাশ তিনটি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. জেড আহমেদ বলেছেন, তিনজন নিহত ছাড়াও গুলিবিদ্ধ বেশ কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তুহিন ও সাইফুল শিবিরকর্মী বলে জামায়াত নেতারা দাবি করেছেন।
অন্যদিকে শাহীনকে যুবলীগের কর্মী দাবি করে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, শিবিরকর্মীদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে পুলিশ ও বিজিবির হামলায় ছত্রভঙ্গ শিবিরকর্মীরা কদমতলা সংলগ্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়।
স্থানীয়রা জানায়, জামায়াত-শিবিরকর্মীরা কাশেমপুর গ্রামে শহরের সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল মামুনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। মামুনকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে তার মৃত্যু হয়।
সংঘর্ষের সময় ওই এলাকায় বহু দোকানপাটও ভাংচুর হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সংঘাত থামলেও শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কোনো দোকান-পাট খোলা নেই। শহরে সড়কগুলোও ফাঁকা। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির টহল রয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে বিজিবি সদস্য ফরিদ, পুলিশ সদস্য রিয়াজুল ইসলাম হাসপাতালে রয়েছেন।
এছাড়া আব্দুল হামিদ, আব্দুল আহাদসহ কয়েকজনও রয়েছেন হাসপাতালে।