ডোরেমন বন্ধ

শিশুদের পড়ালেখার জন্য ক্ষতিকর বিবেচনা করে কার্টুন ডোরেমন সম্প্রচার বন্ধ করেছে সরকার।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Feb 2013, 06:27 AM
Updated : 14 Feb 2013, 06:53 AM

এক সংসদ সদস্য ডিজনি চ্যানেলে সম্প্রচারিত এই কার্টুনটি সম্প্রচার বন্ধের আহ্বান জানানোর ১১ দিনের মধ্যে তথ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সংসদে একথা জানিয়েছেন।

হাসানুল হক ইনু বলেন, কার্টুন ছবি ডোরেমন প্রচারে শিশুদের পড়ালেখার পরিবেশ বিনষ্ট হবে, এটা সরকারের কাম্য নয়।

“ইতোমধ্যে সরকার অনুমোদনহীন বিদেশি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল ডিজনি, ডিজনি এক্সডি ও পোগো সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এর ফলে ডোরেমন কার্টুন সম্প্রচার বন্ধ হয়েছে।”

ডিজনি চ্যানেলে প্রচারিত জাপানি কার্টুন ডোরেমন দেশে শিশুদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তবে হিন্দিতে ভাষান্তরিত এই কার্টুন নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে অনেক অভিভাবকের।

হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদের এক প্রশ্নের জবাবে ডোরেমন সম্প্রচার বন্ধের বিষয়টি মন্ত্রী জানান।

গত ৩ ফেব্রুয়ারি সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম ডোরেমন বন্ধের দাবি তুলে সংসদে বলেছিলেন, এর মতো কার্টুনের প্রভাবে শিশুরা বাংলা বলতে ভুলে যাচ্ছে ও তাদের মনোবিকাশ ব্যাহত হচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, উন্মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির যুগে গণমাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতিনির্ভর অনুষ্ঠান অব্যাহতভাবে প্রচার হচ্ছে।

“দেশের সংস্কৃতির পরিপন্থী কোনো বিষয় যাতে প্রচার না হয়, সে বিষয়ে সরকার সতর্ক এবং এ ধরনের বিষয় প্রচার হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

ইনু জানান, বিদেশি যেসব চ্যানেল বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, সেই সব চ্যানেল বন্ধের ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের চ্যানেল ভারতে প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান আমদানি নীতিতে বাংলাদেশে ভারতীয় চলচ্চিত প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই।

তিনি জানান, বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুযায়ী তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেশে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ও দৈনিক পত্রিকাগুলোকে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় না। শুধু বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সরকারি ব্যয়ে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়।

ক্রোড়পত্র থেকে পত্রিকাগুলি সরকারকে শতকরা ২ ভাগ হারে সারচার্জ দেয়।

এ থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৪ হাজার, ২০১০-১১ অর্থবছরে ১২ লাখ ৩৪ হাজার এবং ২০১১-১২ অর্থ-বছরে ১১ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আয় হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।

টক শো মনিটরিং

এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সংবাদ ও আলোচনা অনুষ্ঠান বিটিভির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে এই বিষয়ে বিটিভিতে পাঁচ সদস্যের একটি মনিটরিং সেল কাজ করছে।

স্থায়ীভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ মনিটরিং সেল গঠনের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, মনিটরিং সেল বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ধারন করে এবং এর ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন পাঠিয়ে থাকে।

৫৮১ পত্রিকা, ২২ টেলিভিশন ও দেড়শ অনলাইন

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে ৫৮১টি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ২২টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল চালু রয়েছে।

টিভি চ্যানেল স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা-২০১২ প্রণয়নের জন্য সরকার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ৭ সদস্যের একটি কমিটি করেছে।

সংসদে প্রায় দেড়শ’ অনলাইন সংবাদপত্রের তালিকা তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী।

তিনি জানান, অনলাইন পত্রিকার জন্য সরকার গণমাধ্যম সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নের উদ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে।

অনলাইন গণমাধ্যম সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সরকার সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, এর আলোকে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয় বরাবরে দাখিল করার জন্য প্রধান তথ্য কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তরকে আহবায়ক করে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।