ঢাকা, নভেম্বর ২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- আশুলিয়ার তাজরিন ফ্যাশনসের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে বিদেশি ক্রেতাদের অসন্তোষ থাকলেও বিজিএমইএ দাবি করেছে, এই কারখানার পরিবেশ ছিল ভালো।
ওই কারখানার অগ্নিকাণ্ড নাশকতা বলেও সন্দেহ করছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের এই সংগঠন, যাতে অন্তত ১১০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, “এটি (তাজরিন ফ্যাশনস) একটি অত্যাধুনিক বড় কমপ্ল্যায়েন্ট কারখানা।”
তাজরিন কারখানা ভবনে জরুরি কোনো নির্গমন পথ ছিল না। সেখানে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকলেও তা ব্যবহার হয়নি, যা এনিয়ে সচেতনতা তৈরির দুর্বলতা তুলে ধরেছে।
তাজরিনের পোশাকের আমদানিকারক বিশ্বের নামী চেইনশপ ওয়াল-মার্ট গত বছর তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছিল, যা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে।
পোশাক শিল্পে অগ্নিকাণ্ড কিংবা অসন্তোষের ঘটনাগুলোকে নাশকতা বলে কারখানা মালিকদের পক্ষ থেকে প্রায়ই বলা হয়।
এক্ষেত্রে নাশকতা ছিল কি না- জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নাশকতার বিষয়টা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
“পোশাক শিল্পকে নিয়ে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে ষড়যন্ত্র হওয়া অসম্ভব কিছু নয়। এই শিল্পকে অস্থিতিশীল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানো সম্ভব। এ বিষয়গুলো তলিয়ে দেখতে হবে।”
এই অগ্নিকাণ্ড তদন্তে মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর পক্ষ থেকে পাঁচটি কমিটি কাজ করছে।
তবে বিজিএমইএ’র সংবাদ সম্মেলনের পর সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, তাজরিনে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়।
তাজরিন ফ্যাশনসের বেঁচে যাওয়া একাধিক শ্রমিক অভিযোগ করেছেন, শনিবার সন্ধ্যায় আগুন লাগার পর ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়ায় তাদের বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
এজন্য শ্রমিক সংগঠনগুলো এই মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ অভিহিত করে এজন্য কারখানা মালিকের শাস্তি দাবি করেছে।
তবে বিজিএমইএ সভাপতি কারখানার জরুরি নির্গমন পথ না থাকার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। এ ঘটনায় কারখানা মালিকের কোনো দায় আছে কি না, সে বিষয়েও কিছু বলেননি তিনি।
শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন তার দুই পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যের কোথাও তাজরিন ফ্যাশনসের কোনো দুর্বলতার কথা নেই।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এগুলোর পেছনে কোনো নাশকতা আছে কি না, অথবা আমাদেরই কোনো দুর্বলতা আছে কি না, তা আমরা বুঝতে চাই।”
সাংবাদিকদের বারবার প্রশ্নের জবাবে তিনি একবার বলেন, “ধোঁয়ার কারণে শ্রমিকরা নিচতলা দিয়ে বের হতে পারেনি।”
ফটকে তালা লাগিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সফিউল ইসলাম বলেন, “কারা শ্রমিকদের বের হতে দিল না, তাদের খুঁজে বের করতে হবে।”
ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার পরও কারখানাটির মালিক দেলোয়ার হোসেনসহ মালিক পক্ষের কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। গণমাধ্যমের সামনেও আসেননি তারা।
এ নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে সফিউল ইসলাম বলেন, “উনারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে হাসপাতালে আহতদেরও তারা খোঁজখবর নিচ্ছেন।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/আরবি/এমআই/২০৫৯ ঘ.