জনসংখ্যা এখন সোয়া ১৫ কোটি

বাংলাদেশের জনসংখ্যা বর্তমানে ১৫ কোটি ২৫ লাখ ১৮ হাজার।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2012, 01:29 AM
Updated : 16 Nov 2014, 02:01 PM

পঞ্চম আদমশুমারির প্রাথমিক ফল প্রকাশের ঠিক এক বছরের মাথায় সোমবার বঙ্গভবনে পঞ্চম আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১-এর এই চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়।

সোমবার রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ওয়েবসাইটে আদমশুমারির এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দশকে জনসংখ্যা প্রতিবছর ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে বেড়েছে যা ২০১১ সালে ছিল ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

এতে বলা হয়, নারী ও পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান - ৭ কোটি ৬৩ লাখ ৫০ হাজার ৫১৮ জন পুরুষ ও ৭ কোটি ৬১ লাখ ৬৭ হাজার ৪৯৭ জন নারী। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে এক হাজার ১৫ জন।

একযোগে বাংলাদেশের সব জেলার সদরদপ্তর থেকে আদমশুমারির ফল প্রকাশ করা হয়।

প্রেসিডেন্ট জানান, জাতীয় সম্পদ বন্টনে ভারসাম্য আনা, নির্বাচনী এলাকা চিহ্নিত করা এবং চাকরিতে কোটা নির্দিষ্ট করার ক্ষেত্রে এ প্রতিবেদনের তথ্য খুবই কাজে আসবে।

গত বছরে জুলাইয়ে এই আদমশুমারির প্রাথমিক ফলাফলে বলা হয়েছিল, আদমশুমারির রাত ২০১১ সালের ১৫ মার্চ দেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার, যা ধারণার চেয়ে কম বলে তখন বিস্ময় প্রকাশ করেন অনেকেই। এর মধ্যে ৭ কোটি ১২ লাখ ৫৫ হাজার পুরুষ এবং ৭ কোটি ১০ লাখ ৬৪ হাজার নারী।

গত বছর প্রাথমিক ফল প্রকাশের পর আদমশুমারির তথ্য যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএসকে। গত ৯ এপ্রিল বিআইডিএস জানায়, তাদের মূল্যায়নে শুমারিতে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ মানুষ গণনা থেকে বাদ পড়েছে।

এই ভুল সংশোধন করেই জনসংখ্যার চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করলো বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।

আদমশুমারির প্রকল্প পরিচালক অসীম কুমার দে বলেন, “তথ্য যাচাইয়ের পর চূড়ান্ত হিসাবে দেখা যাচ্ছে আদমশুমারির রাতে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭২ হাজার। এটার ওপর ভিত্তি করে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ধরে আজকের (জুলাই ১৬) হিসেব বের করা হয়েছে।”

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সচিব রীতি ইব্রাহিম জানান, স্বল্পতম সময়ে তারা চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে পেরেছেন।

আদমশুমারির জন্য মার্কিন সেন্সাস ব্যুরো আধুনিক সফটওয়ার ও স্ক্যানার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনএফপিএ অর্থনৈতিক সহায়তা দেয়।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী একে খন্দকার জানান, প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি বিদেশে থাকেন, যাদের আদমশুমারিতে গোনা হয়নি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ বছরের বেশি বয়সী জনসংখ্যার মধ্যে সাক্ষরতার হার ৫১ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে পুরুষ ও নারীদের সাক্ষরতার হার যথাক্রমে ৫৪ দশমিক ১ ও ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতিবন্ধীদের হার ১ দশমিক ৪ শতাংশ। ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী ১ দশমিক ১০ শতাংশ।

চূড়ান্ত ফলে দেখা গেছে, দেশে মোট খানার (এক রান্নায় যতজন খায়) সংখ্যা ৩ কোটি ২১ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩০টি, এর মধ্যে বাসাবাড়ির খানা ৩ কোটি ১৮ লাখ ৬৩ হাজার ৩৯৬টি।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে দেশে প্রথম আদমশুমারি হয়। তখন প্রাথমিক ফলাফলে জনসংখ্যা ৭ কোটি ১৪ লাখ দেখা গেলেও চূড়ান্ত ফলাফলে তা বেড়ে ৭ কোটি ৬৪ লাখ হয়।

আর ২০০১ সালে চতুর্থ আদমশুমারিতে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৩ লাখ ৫৫ হাজার। জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮৩৪ জন।