নুরুল ইসলাম হাসিব
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জেষ্ঠ্য প্রতিবেদক
ঢাকা, জুন ০৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেট জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা না করে তামাক শিল্পের জন্য ‘আনন্দ’ নিয়ে এনেছে বলে দাবি করেছে তামাক বিরোধী আন্দোলনকারীরা।
বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়ায় তামাক বিরোধীরা জানিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ওপর করারোপের জন্য সব মহলের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। স্থানীয়ভাবে তৈরি সস্তা বিড়ি ও ধোয়াহীন তামাক পণ্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি তিনি।
এ বছর বাজেট অধিবেশন শুরুর আগেই ৬০ জনেরও বেশী সাংসদ বিড়িসহ অন্যান্য তামাকজাত পণ্যের উপর বর্ধিত করারোপের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দিয়েছিলেন।
বৃহষ্পতিবার সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবছর তামাকের ব্যবহার কমাতে সরকারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা বললেও তিনি বিড়ির ওপর সম্পূরক শুল্ক মাত্র তিন শতাংশ এবং তিনটি মূল্যধাপের সিগারেটের ওপর সম্পূরক কর মাত্র এক শতাংশ বাড়িয়েছেন।
নতুন বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী তামাকজাত পণ্যে চারটি মূল্য ধাপে সম্পূরক শুল্ক দিতে হবে যথাক্রমে ৩৯, ৫৬, ৫৯ ও ৬১ শতাংশ হারে। এর আগে যার পরিমান ছিল যথাক্রমে ৩৬, ৫৫, ৫৮ ও ৬০ শতাংশ।
বাজেটের আগে তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর পাশপাশি অর্থনীতিবিদরাও মূল্যধাপ উঠিয়ে সব রকম তামাকজাত পণ্যেও ওপর ৭০ শতাংশ করারোপের দাবি করেছিলেন।
অর্থমন্ত্রী সিগারেটের মূল্যধাপ উঠিয়ে না দিয়ে চারটির সবগুলোতেই ১০ শতাংশ হারে মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছেন যাতে করে শুধু তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারীরা লাভবান হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আগেই মত দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে তামাকের অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ তাইফুর রহমান বলেন, “জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এ দাবিটি আরো একবার উপেক্ষিত হলো।”
বিড়ির ওপর করারোপে অর্থমন্ত্রীর নীরবতা তাদেরকে বিস্মিত করেছে বলেন জানান তাইফুর রহমান।
সিগারেটের মূল্য অল্প বাড়ায় তা ধূমপান বর্জনে কোনো প্রভাব রাখবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তামাক শিল্পের লোকজন এতোদিন ধরে যা চেয়ে আসছিল এই বাজেট প্রস্তাবের মাধ্যমে তারা তা পেয়ে গেল।”
ধোঁয়াহীন তামাক পণ্যের ব্যবহার দিনের পর দিন বাড়লেও এর ওপর অতিরিক্ত কোন করারোপ করা হয়নি বলেও তিনি জানান।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক এক সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি বলেছিলেন তারা (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে বিড়ির উপর ৩০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এনআইএইচ/আরআরডি/এসইউ/১৯১৩ ঘ.