ছেলের জানাজা পড়ালেন প্যারোলে মুক্ত সাঈদী

জানাজা শেষে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার পর জামায়াত নেতা বুকে ব্যথা অনুভবের কথা জানালে তাকে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2012, 05:14 AM
Updated : 14 June 2012, 05:14 AM
ঢাকা, জুন ১৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- দুই ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ছেলের জানাজায় ইমামতি করেছেন যুদ্ধাপরাধের মামলায় অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
এদিকে জানাজার পর কারাগারে ফেরত নেওয়া হলে বৃহস্পতিবার রাতে বুকে ব্যথা অনুভব করার কথা জানান সাঈদী। তখন তাকে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ মাহাবুবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
কারাগারে বাবার সুচিকিৎসার জন্য আবেদন করেছেন জামায়াত নেতার ছোট ছেলে মাসুদ সাঈদী।
এর আগে কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে এই জামায়াত নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মতিঝিল বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে যাওয়া যাওয়া হয়। সেখানে তার বড় ছেলে রফিক বিন সাঈদীর জানাজা শেষে তাকে আবার ফিরিয়ে আনা হয় কারাগারে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিকাল ৫টা থেকে জানাজা শেষ হওয়া পর্যন্ত সাঈদীকে প্যারোলে মুক্তির এই অনুমতি দেয়।
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান রফিক। ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল।
সাঈদীর ছোট ছেলে মাসুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের বাবা যাতে রফিকের জানাজায় অংশ নিতে পারেন সেজন্য বুধবারই প্যারোলের আবেদন করা হয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারাধ্যক্ষ মাহাবুবুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিকাল ৫টার দিকে প্যারোলের কাগজ হাতে পেয়ে পৌনে ৬টার দিকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। কারাগারের একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্কুলের মাঠে।
সোয়া ৬টার দিকে সেখানে পৌঁছানোর পর সাড়ে ৬টায় ছেলের জানাজায় ইমামতি করেন সাঈদী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, মির্জা আব্বাস, বরকতউল্লাহ বুলু ও আলতাফ হোসেন এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেন।
জানাজা শেষে মাঠের একপাশে পুলিশি পাহারায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন সাঈদী। এরপর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তাকে নিয়ে আবার কারাগারের পথে রওনা হয় কারা কর্তৃপক্ষের মাইক্রোবাসটি।
সাঈদীর ছোট ছেলে মাসুদ বলেন, “ভাইয়াকে আমাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরে আল্লামা সাঈদী ফাউন্ডেশন মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হবে। বাবাই এ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।”
গত বছর অক্টোবরে সাঈদীর মা গুলনাহার ইউসুফ সাঈদী মারা গেলে তখনও প্যারোলে মুক্তি পান জামায়াত নেতা সাঈদী। একই মাঠে তিনি মায়ের জানাজায় ইমামতি করেন।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলায় গত বছরের ২৯ জুন সাঈদী গ্রেপ্তার হন। এরপর তাকে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিচার চলছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমকে/কেটি/এলএইচ/জেকে/১৯৩০ ঘ.