নকল মোবাইল সেট বৈধের সুযোগ

অবৈধ সেটগুলো বৈধ করে এরপর সব নকল হ্যান্ডসেট বন্ধ করতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দিতে যাচ্ছে বিটিআরসি। শামীম আহমেদের প্রতিবেদন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2012, 07:48 AM
Updated : 30 March 2012, 07:48 AM
শামীম আহমেদ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
ঢাকা, মার্চ ৩০ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- অবৈধ সেট বন্ধের আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে নকল মোবাইল হ্যান্ডসেট বৈধ করার সুযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন- বিটিআরসি।
প্রতিটি নকল হ্যান্ডসেটে আইএমইআই (International Mobile Equipment Identity) নম্বর দেওয়ার জন্য অক্টোবর থেকে মোবাইল ফোন অপারেটরদের উদ্যোগ নিতে বলা হচ্ছে।
এজন্য অপারেটরদের জিআইআইপি (GENIUNE IMEI IMPLANT PROGRAM) কর্মসূচি নেওয়ার দিক-নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে বিটিআরসি।
জিআইআইপি শেষে নকল হ্যান্ডসেট ব্ল¬ক করার কাজ শুরু করতে পারবে অপারেটররা। এজন্য অপারেটরদের এক বছর সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে।
এই কর্মসূচির আওতায় আইএমইআই নম্বরবিহীন সেট ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা নিয়ে একটি আইএমইআই নম্বর দেওয়া হবে। সেট ব্লক করা শুরুর ছয় মাস আগে এই কাজ করতে হবে অপারেটরদের।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা অপারেটর, হ্যান্ডসেট আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে।
আগামী এপ্রিল মাসে অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা, হ্যান্ডসেট চুরি ও নকল হ্যান্ডসেট প্রতিরোধেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
আইএমইআই নম্বর হলো ১৫ ডিজিটের একটি সিরিয়াল নম্বর, যা প্রতিটি মোবাইল সেটের সঙ্গে থাকে। এক সেটের সঙ্গে অন্য সেটের আইএমইআই নম্বর কখনোই মেলে না।
আইএমইআই নম্বরবিহীন নকল হ্যান্ডসেট ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা নানা অপকর্ম করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আইএমইআই নম্বরবিহীন কোন সেট হারিয়ে গেলে তা উদ্ধার করা সম্ভব হয় না।
একটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের কি-প্যাডে *#০৬# পরপর চাপলে ওই মোবাইল ফোনের বিশেষ এই সনাক্তকরণ নম্বরটি জানা সম্ভব।
বাংলাদেশের বাজারে আমদানি করা মোবাইল হ্যান্ডসেটের প্রায় ৩০ ভাগই নকল বলে বিটিআরসি বলছে, যা স্বীকার করেছে ব্যবসায়ীরাও। সস্তা হওয়ায় আইএমইআই নম্বরবিহীন সেট ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী, গত জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে মোবাইল ফোন গ্রাহকের সংখ্যা ৮ কোটি ৬০ লাখ।
স্থাপন করতে হবে এনইআইআর
মোবাইল হ্যান্ডসেট চুরি এবং নকল হ্যান্ডসেট প্রতিরোধে অপারেটরদের বিশেষ সিস্টেম স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছে বিটিআরসি। ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) নামে এই যন্ত্র প্রতিটি মোবাইল ফোন অপারেটরকে স্থাপন করতে হবে।
এটি স্থাপন করা হলে ব্যবহারকারীরা আইএমইআই নম্বরবিহীন হ্যান্ডসেট দিয়ে সিম ব্যবহার করলে তা বন্ধ করে দেওয়া যাবে। এছাড়া নম্বরযুক্ত কোনো হ্যান্ডসেট চুরি হলে তা সহজেই উদ্ধার করা যাবে।
কিছু দিন আগে বিটিআরসির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ৬ মাসের মধ্যে অপারেটরদের এনইআইআর স্থাপন করতে হবে। এর পরই অপারেটররা জিআইআইপি শুরু করবে।
এনইআইআর বসানো হলে এক জন গ্রাহক যখন ফোন কল করবেন, তখন কলটির সিগন্যালের সঙ্গে মোবাইল সেটের নম্বর, সিম নম্বর ও আইএমইআই নম্বরও অপারেটরের সার্ভারে যাবে। এতে সিম কার্ড বদলে ফেললেও হ্যান্ডসেটের কারণেই এক জন কলারকে সনাক্ত করা সম্ভবপর হবে, যা অপরাধীদের ধরতে সহায়ক হবে।
ডাটাবেজ করতে হবে অপারেটরদের
বাংলাদেশের সব হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর দিয়ে একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে অপারেটরদের। এজন্য যাবতীয় খরচ অপারেটরদেরই বহন করতে হবে। আর এ ডাটাবেজ সব সময় আপডেট করতে হবে।
অপারেটরদের এনইআইআর সিইআইআর (centerl equipment identy register) এবং টিআইএ (telecommunication industry association) এর সঙ্গে যুক্ত থাকবে, যাতে অন্য দেশে হ্যান্ডসেট চলে গেলেও তা সনাক্ত করা সম্ভব হবে।
এছাড়া নকল হ্যান্ডসেট ব্যবহার থেকে বিরত থাকা এবং হ্যান্ডসেট চুরি ঠেকাতে অপারেটরদের প্রচার চালানোর নির্দেশনাও দিয়েছে বিটিআরসি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএইচএ/এমআই/১৯৪০ ঘ.